‘বাংলাদেশে গিয়ে মিথ্যে বলে ভোট চাইছেন’, প্রধানমন্ত্রীর পাসপোর্ট বাতিলের দাবি মমতার

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Mar 27, 2021 | 3:50 PM

যে দিন থেকে বাংলায় ভোট, সে দিনই পদ্মাপাড়ে কী করছেন মোদী? শনিবার খড়্গপুর সদরের সভা থেকে এই সওয়াল উস্কে দেন মমতা। তিনি জানতে চান, "প্রধানমন্ত্রীর পাসপোর্ট বাতিল হবে না কেন?"

বাংলাদেশে গিয়ে মিথ্যে বলে ভোট চাইছেন, প্রধানমন্ত্রীর পাসপোর্ট বাতিলের দাবি মমতার
ফাইল চিত্র।

Follow Us

মেদিনীপুর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) বাংলাদেশ (Bangladesh) সফর নিয়ে এ বার প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলললে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যে দিন থেকে বাংলায় ভোট, সে দিনই পদ্মাপাড়ে কী করছেন মোদী? শনিবার খড়্গপুর সদরের সভা থেকে এই সওয়াল উস্কে দেন মমতা। তিনি জানতে চান, “প্রধানমন্ত্রীর পাসপোর্ট বাতিল হবে না কেন?”

শুক্রবার দু’দিন ব্যাপী বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন মোদী। শনিবার এক কালীমন্দিরে তিনি পুজো দেন। বিকেলে মতুয়াদের তীর্থস্থান ওড়াকান্দিতেও যাবেন তিনি। সেই নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করে মমতা বলেন, “আপনি ট্রাম্পের জন্য ভোট চাইতে যান। বাংলায় ভোট চলাকালীন আপনি বাংলাদেশে একটা শ্রেণির মানুষকে মিথ্যে কথা বলার জন্য ভোট চাইতে যান, তাহলে আপনার ভিসা কেন বাতিল হবে না? আপনার কেন পাসপোর্ট বাতিল হবে না? আমরা নির্বাচন কমিশনকে নালিশ জানাবো।”

রেলশহর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বেসকারিকরণকে কাঠগড়ায় তুলে নেত্রী বলেন, “এখানে বিজেপির সাংসদ হয়েছে (দিলীপ ঘোষ)। সে রেলের কর্মীদের ধমকায়-চমকায়। রেলের অন্যদিকে কর্মীদের ঘর ভাঙা অবস্থায়। একটা ধর তৈরি করে দেয় না। আমিও জীবনে দু’বার রেলমন্ত্রী ছিলাম। খুব ভাল করে রেলকে চিনি। বেসরকারিকরণ করে দিচ্ছে রেলের সম্পত্তিকে। খড়্গপুরে ৯০ শতাংশ রেলের জমি। রেল যদি বেচে দেয় আপনারা খাবেন কী? রেল কিছু করেনি। সবটাই আমরা করেছি।”

শনিবার একের পর এক চারটি সভা করছেন মমতা। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় থেকে শুরু করে পিংলা, খড়্গপুর সদর এবং ডুমুরজোলায় সভা করেন তিনি। সবকটি সভা থেকেই একটি বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দেন মমতা। আসন্ন বিধানসভ ভোটে জয়ের ক্ষেত্রে তিনি অনেকটাই নির্ভর করেছেন মহিলা ভোটের উপর। বাইরে থেকে এসে যারা টাকা ছড়াচ্ছে তাদের ধরার দায়িত্ব মহিলাদের কাঁধেই তিনি সঁপে দেন। পাশাপাশি জোরাল আক্রমণ শানান শুভেন্দু ও শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে।

পিংলার সভার প্রথম থেকেই সভায় উপস্থিত মহিলাদের মন পাওয়ার বিশেষ চেষ্টা ধরা পড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। তিনি বলেন, “আমার মা যখন মারা গেল তখন আমার খুব কষ্ট হয়েছিল। মা-ই সব। আমি মায়ের মুখ না দেখে ঘর থেকে বেরোতাম না। আপনাদের দেখলে মায়ের কথা খুব পড়ে। আপনারাই তো আমার মা।”

আরও পড়ুন: মমতার ‘ফোন’ বিজেপি নেতাকে, ‘আমাদের হয়ে একটু কাজ করে দাও না’!

তিনি আরও বলেন, “প্রথম দফাতেই বিজেপির দফা রফা হয়ে যাবে। ওদের যেখানে শক্তি আছে সেখানে বাইরের লোক নিয়ে আসছে। কোথাও কেউ ভোট দিতে বাধা দিলে হাতা, খুন্তি, বেলন নিয়ে চলে যান। দুধ কলা দিয়ে কেউটে সাপ পুষেছিলাম। ওটা আমার দোষ ওদের দোষ নয়। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর দুয়ারে সরকার চলবে।”

নারায়ণগড় সভার শুরুতেই নাম না করে অধিকারী পরিবারকে মারাত্মক তোপ দাগেন মমতা। বলেন, “আমাদের মধ্যে আগে যারা সিপিএম করত। তারা এখন বিজেপির ওস্তাদ হয়েছে। আমাদের দুই গদ্দার ছিল বাপ আর ব্যাটা। বাপ আর ব্যাটা হয়েছে গদ্দারির বড় জ্যাঠা।” তাঁর দাবি, “কাল রাত ১২ টার সময় এই জ্যাঠার এক ব্যাটা টাকা বিলি করছিল। মেয়েরা ধরিয়ে দিয়েছে। মমতার আরও দাবি, অমিত শাহ নির্বাচন কমিশন চালচ্ছে। একটা হোঁদল কুতকুত নেতা।”

আরও পডুন: ‘ভোট দিতে গেলেই কেটে ফেলব’, বুথের সামনেই কাটারি হাতে চমকাচ্ছে যুবক

ভোট দিতে কেউ বাধা দিলে সভা থেকে মহিলাদের একজোট হয়ে হাতখুন্তি নিয়ে বেরোনর জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আর কিছু না থাকলে ঝাড়ু নিয়ে বেরোন। বন্দুকের বদলে এসবে কাজ হবে।”

এ দিনের সভায় জনৈক এক যুবক একটি প্ল্যাস্টিকের ফুটবল নিয়ে আসে। সেই বল হাতে নিয়ে খেলা হবে হুঙ্কার দেন মমতা। এরপর ডেকে পাঠান সভাস্থলে উপস্থিহ এক মহিলাকে। তাঁর হাতে বল ছুড়ে দিয়ে বলেন, “আমি বসে কীভাবে খেলব। এটা প্ল্যাসটিকের বল। খেলতে আমিও পারি। এক পায়ে এমন শট দেব না। মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেব।”

আরও পড়ুন: ‘আমার রক্তে বেইমানি নেই’, মমতার ‘ফোন’ পেতেই বিস্ফোরক বিজেপির প্রলয়

 

Next Article