শিলিগুড়ি: তৃণমূলে (TMC) বিড়ম্বনা কমছে না। কোন্দল এবার উত্তরে। খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পর্যটনমন্ত্রী। এক দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগড়ে দেন গৌতম দেব (Goutam Deb)। নাম না করে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে (Rabindranath Ghosh) নিশানায় তিনি স্পষ্টভাবে জানান, উন্নয়নের কাজে ভাটা পড়েছে তিনি মন্ত্রক ছাড়ার পর।
উত্তরের দুই মন্ত্রীর বিরোধ সর্বজনবিদিত। ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন থেকেই গৌতম ও রবির ঠাণ্ডা লড়াইয়ের সূত্রপাত। দলীয় অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দু’জনে হাসিমুখে ছবি তোলেন ঠিকই। তবে ঘনিষ্ঠরা এই দুই মন্ত্রীর মতানৈক্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
গতকাল শিলিগুড়ি সংলগ্ন জলপাইগুড়ি জেলায় নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি এলাকায় একটি কর্মসূচিতে যোগদান করেন গৌতম দেব। তিনি জানান, “এর আগে আমি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ছিলাম। অসংখ্য কাজ করেছি। বহু রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু বহু রাস্তার এখন সংস্কার প্রয়োজন। এখন আমি পর্যটনমন্ত্রী। আমার দফতর থেকে এই সংস্কারের কাজ করা যাবে না। এই রাস্তাগুলো সংস্কার হচ্ছে না। আমি বারংবার চিঠি দিয়েছি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে।”
ক্ষোভে সুরে তিনি আরও জানিয়েছেন, “কম করে ১০০টি চিঠি দিয়েছি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই চিঠির পরেও কোনও কাজ হয়নি। কিছু কাজ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মানুষের প্রত্যাশা পূরণে বহু কাজ না হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন। বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় হস্তক্ষেপ করেছে। এবং আমাকে জানানো হয়েছে রাস্তাগুলো সংস্কার করা হবে।”
এদিকে ঘটনা নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি টেলিফোনে জানান, “কেউ যদি আমায় বদনাম করতে চায়, তাহলে কিছু বলার নেই। যা বলার দলনেত্রীকে বলব।”
আরও পড়ুন: সর্বহারাদের ‘সরকারি ছাদ’ নয়, নগদ টাকা দেবে পুরসভা
উত্তরবঙ্গের দুই মন্ত্রীর রাজনৈতিক অবস্থান একই দলে থেকেও হামেশাই ভিন্ন মেরুতে থেকেছে। এর বড় কারণ হল, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর এমন একটি জায়গা যেখানে থেকে সব দফতরের কাজে হস্তক্ষেপ করার এক্তিয়ার রয়েছে। উন্নয়ন মন্ত্রী থাকার সময় গৌতম দেব উত্তরকন্যাও তৈরি করেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মন্ত্রী হওয়ার পর সেখানে একটি ঘর চেয়েও পাননি গৌতম দেব। যা নিয়ে চাপা ক্ষোভ তাঁর মনে ছিলই। বিধানসভা বৈঠকের মাসকয়েক আগে বাকিদের মতো তিনিও নিজের পুঞ্জিভূত সেই ক্ষোভ প্রকাশ্যে আনা শুরু করেছেন বলে মত বিশ্লেষকদের।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদে বিজেপি-ফেরত বিপ্লব মিত্র