সর্বহারাদের ‘সরকারি ছাদ’ নয়, নগদ টাকা দেবে পুরসভা
স্থানীয়দের একটা বড় অংশ এই নিয়ে আপত্তি তোলেন। তাঁরা দাবি করেন, এতে একাধিক সমস্যা হবে। উদাহরণস্বরূপ, যাদের দু'কাঠা এলাকায় ঘর ছিল, তাঁদের বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে কোনও ভাবে উনিশ-বিশ হতে পারে।
কলকাতা: বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত বাগবাজারের হাজারহাত (Bagbazar Fire) বস্তিতে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে বাসস্থান তৈরি করে দেবে না পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। তার বদলে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সরাসরি আর্থিক সাহায্য করা হবে। সেই সাহায্য নিয়ে পরিবারগুলি পুনরায় নিজেদের মাথার উপর ছাদ তৈরি করবে।
কার্যত জতুগৃহে পরিণত হওয়া হাজারহাত বস্তিতে গতকালই ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও (Firhad Hakim)। সেখানে দাঁড়িয়েই মমতা জানান, ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে সবার বাড়ি পুনরায় তৈরি করে দেওয়া হবে। তার জন্য যা যা করণীয়, সেই পদক্ষেপ ফিরহাদ হাকিমকে করার নির্দেশ দেন তিনি।
কিন্তু, স্থানীয়দের একটা বড় অংশ এই নিয়ে আপত্তি তোলেন। তাঁরা দাবি করেন, এতে একাধিক সমস্যা হবে। উদাহরণস্বরূপ, যাদের দু’কাঠা এলাকায় ঘর ছিল, তাঁদের বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে কোনও ভাবে উনিশ-বিশ হতে পারে। কোনও ভাবে বাড়ি আড়াই কাঠায় তৈরি হয়ে গেলে সমস্যায় পড়বেন পাশের জমির বাসিন্দা। একেই সংকীর্ণ বস্তি এলাকায় এক-এক ফুট জায়গাও অনেক বেশি দামি সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য। কোনও ভাবে জমির মাপ কম-বেশি হলে, এলাকাবাসীর মধ্যেও গণ্ডগোল লেগে যেতে পারে।
শুধু তাই নয়। হাজারহাত বস্তিতে এমন কিছু টিনের বাড়ি ছিল যা তিন তলা। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর তৈরি হলে তা দোতলার বেশি হবে না। ফলে জায়গা নিয়েও জট হতে পারে। তাই এলাকাবাসীর বক্তব্য, তাঁরা চান না সরকার বা পুরসভার পক্ষ থেকে কোনও বাড়ি করে দেওয়া হোক। হাতে নগদ টাকা পেলে তাঁরা নিজেরাই সুবিধামতো বাড়ি করে নেবেন।
আরও পড়ুন: ফের অগ্নিকাণ্ড, একাধিক ঝুপড়ি পুড়ে ছাই নিউটাউনে, ‘ফিশি ব্যাপার’ কটাক্ষ বিজেপির
শেষপর্যন্ত স্থানীয়দের দাবিকে প্রাধান্য দিয়েই এদিন নগদ টাকা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আগুনে সর্বহারা ১৩৮টি পরিবারকে। বস্তুত, বিধানসভা ভোটের আগে কোনও রকম বির্তকে কলকাতা পুরসভা যেতে চাইছে না। আসছে মার্চে কলকাতা পুরভোটও হতে পারে। এই অবস্থায় শুক্রবার এই বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। যেখানে উপস্থিত ছিলেন পুর কমিশনার বিনয় কুমার, বিশেষ কমিশনার তাপস চৌধুরী, এলাকার বিদায়ী জনপ্রতিনিধি বাপি ঘোষও।
সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে না করে আর্থিক সাহায্য করা হবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে। যদিও কত টাকা করে সাহায্য করা হবে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পরবর্তী সময়ে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: শতাব্দীর বাড়িতে বসে ‘বন্ধু’র আড্ডা, সামনেই এলো ‘মুকুলদা’র ফোন