কলকাতা: মালদহ নার্সিংহোমকাণ্ডে এবার কেঁচো খুড়তে কেউটে। ফাঁস হচ্ছে আরও কুর্কীর্তি। একা আনিরুল নয়। দুষ্কৃতীর পাণ্ডা আরও এক মুরুব্বি। উঠে আসছে উজ্জ্বলের নাম।
টিভি ৯ বাংলার প্রতিনিধি শুভোতোষ ভট্টাচার্য মালদার অ্যাপোলো হাসপাতালের দালাল চক্রের কীর্তি ফাঁস করতে গেলেই তাঁর গতিবিধির গোপন ভিডিয়ো করেন নার্সিংহোমের স্টাফরা। সেই ভিডিয়ো এনে দেওয়া হয় আনারুল এবং উজ্জ্বলকে। এরপর শুভোতোষকে ফোন করেন উজ্জ্বল। খবরটি সম্প্রচারিত না করার হুমকি দেওয়া হয়। রফা করতে শুভোতোষকে ডাকেন স্থানীয় একটি রেস্তোঁরায়। তবে মানেনি আমাদের প্রতিনিধি। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর বক্তব্য নিতে গেলে আমাদের দুই সাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করে নার্সিংহোমের গুন্ডারা।
কে এই উজ্জ্বল?
সূত্রের খবর, গোটা ঘটনার নাটের গুরুই হল উজ্জ্বল। ওই হাসপাতালের দু’একজন কর্মীদের বক্তব্য অনুযায়ী, এই উজ্জ্বলই আনিরুলকে জানিয়েছিলেন কীভাবে খবর সম্প্রচার করা হবে। পাশে একটি হোটেল এবং বার রয়েছে। ওই বারে বসেই গোটা বিষয়টির পরিকল্পনা সারে উজ্জ্বল। এমনকী মারধরের এই ঘটনা উজ্জ্বলের নির্দেশেই ঘটেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। কারণ এই ঘটনার কিছু আগেই নার্সিংহোমের কয়েকজন কর্মী ছবি তুলে পাঠিয়েছিলেন মালিককে।
জানা গিয়েছে উজ্জ্বল ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত। ফেরার ছিলেন। কিছুদিন আগে সে ফিরেছে।এখন প্রশ্ন কার ছাত্রছায়ায় সে এত ক্ষমতার অধিকারী মালদা অঞ্চলে ? এর পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, উজ্জ্বল সামান্য চালের ব্যবসায়ী ছিল। এখন সে বিদেশে পাথর,চাল, সবজি রপ্তানি করে। এখানেও বেআইনিভাবে রপ্তানি করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
মালদহ ব্যবসায়ী মহল সূত্রের খবর, টাকা তছরূপের অভিযোগ রয়েছে উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে। পরে সে এক তৃণমূল কর্মীর মোটা টাকা গায়েব করে ফেরার হয়ে যায়। একই সঙ্গে মালদা মেডিক্যাল কলেজে স্ট্যাম্প জালিয়াতির অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে।
এই উজ্জ্বলই মূলত ওই নার্সিংহোমটি বর্তমানে দেখভাল করে। দীর্ঘ ২০ দিন ধরে যখন পতিরামের ওই প্রসূতির স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা তাঁকে নিতে আসেনি সেই সময় সংবাদ মাধ্যমের সামনে কী গল্প বলতে হবে তা হাসপাতালের আয়া মাসিদের শিখিয়ে দেয় উজ্জ্বল। উজ্জ্বলের শেখানো গল্পই আয়ারা ওই প্রসূতিকে শোনায়। যে কন্যা সন্তান হওয়ায় তাঁর পরিবার ও স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল মালদা অ্যাম্বুলেন্স কাণ্ডে প্রথম উঠে আসে আনারুল হক। ইংরেজ বাজারের অ্যাপোলো নার্সিংহোমের মালিক। নিজের নার্সিংহোমের সামনে দালাল আর গুন্ডাদের লেলিয়ে দিয়েছিলেন আনারুল। তাঁর নির্দেশেই বেপরোয়া গুন্ডাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছে TV9 বাংলার প্রতিনিধি শুভতোষ ভট্টাচার্য ও শাম্ব সাহার ওপর। আনারুলের অপরাধের রেকর্ড বেশ পুরোনো। চল্লিশ পার করা আনারুল অনেকদিন ধরেই মালদার আন্ডারওয়ার্ল্ডের চেনা নাম। নার্সিংহোমের ব্যবসার পিছনে রয়েছে অসংখ্য কীর্তি।