ব্যান্ডেল: হুগলীর (Hooghly) ব্যস্ততম স্টেশনের কথা উঠলেই শুরুতেই নাম আসে ব্যান্ডেল জংশন স্টেশনের (Bandel Junction Station)। এদিকে প্রতিদিনের মতই মঙ্গলবারও এই স্টেশনে ভোর থেকেই বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। কিন্তু এরমাঝেই ঘটে যায় বড়সড় বিপত্তি। ঘড়িতে বাজে ভোর ৫টা ১০। ডাউন ৩৭২১৮ ব্যান্ডেল-হাওড়া লোকাল ছাড়ার তোড়জোড় চলছে এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে। বহু মানুষ তখনও প্ল্যাটফর্মে উঠে ট্রেন ধরতে ছুটছেন। ব্যস্ততা গোটা স্টেশন চত্বরেই। তারমধ্যেই ছেড়ে দেয় ট্রেন। এদিকে চলন্ত ট্রেনেই উঠতে যান ৪৫ ঊর্ধ্ব দুই মহিলা।
এদিকে ট্রেন তখন হর্ন বাজিয়ে বেশ কিছুটা গতি বাড়িয়ে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে ছুটতে শুরু করে দিয়েছে। চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে টাল সামলাতে না পেরে প্ল্যাটফর্ম আর ট্রেনের মাঝে পড়ে যান দুই মহিলা। ওই অবস্থাতেই ফের ট্রেনে উঠতে যান তাঁরা। কিন্তু, আর একটু হলেই ট্রেন আর প্ল্যাটফর্মের ফাঁক গলে তৈরি হয় নীচে চলে যাওয়ার উপক্রম। ঠিক সেই সময় ওই প্ল্যাটফর্মে ডিউটি করছিলেন ব্যান্ডেল আরপিএফের এএসআই আশিস সিং। তিনি দুই মহিলাকে চলন্ত ট্রেনে উঠতে না পেরে ট্রেনের সঙ্গে ছুটতে দেখেন। পরিস্থিতি দেখেই দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন দুই যাত্রীকে বাঁচাতে।ফিল্মি কায়দায় প্ল্যাটফর্মের দিকে টেনে নেন দু’জনকে।
এদিকে এই ঘটনা দেখে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়ে যায় গোটা প্ল্যাটফর্মেই। আরপিএফ ও ব্যান্ডেল জিআরপি কর্মীদের পাশাপাশি যাত্রীরাও জড়ো হয়ে যান। এরপর বিষয়টি নজরে আসতেই ট্রেন থামিয়ে দেন গার্ড। তবে, রাখে হরি তো মারে কে! মৃত্যু মুখ থেকে ফিরে এলেও এই ঘটনায় ওই দুই মহিলার তেমন কোনও আঘাত লাগেনি। তারপর ওই দুই মহিলাকে ওই ট্রেনেই অক্ষত অবস্থায় তুলে দেন কর্তব্যরত আরপিএফ কর্মীরা। এই পুরো ঘটনা ক্যামেরাবন্দি হয় ব্যান্ডেল প্ল্যাটফর্মে লাগানো সিসিটিভিতে। এদিকে বারবার আরপিএফ ও জিআরপির তরফ থেকে প্রচার চালানো হলেও বহু মানুষকে দেখা যায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই ট্রেনে উঠতে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলে লাইন পারাপার। এই চাঞ্চল্যকর ঘটে যাওয়ার পর তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে কবে ফিরবে যাত্রীদের হুশ?