রায়গঞ্জ : ডালখোলার পাতনোরের পর এবারে রায়গঞ্জ। স্কুলের পাশে একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে খেলতে গিয়ে বোমা ফেটে (Bomb Blast) গুরুতর জখম তিন শিশু। বুধবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে রায়গঞ্জের (Raiganj) লক্ষনিয়া এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন ফকিরটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন পড়ুয়া মিড ডে মিলের খাবার খেয়ে স্কুল ছুটির পর স্কুলের পাশেই রাস্তার ধারের একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে খেলছিল। সেখানেই তারা একাধিক কৌট পড়ে থাকতে দেখে। একটি কৌট খুলতেই তা তীব্র শব্দে ফেটে যায়। কেঁপে ওঠে গোটা এলাকায়। গুরুতর আহত হয় তিন খুদে। তাদের চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই উদ্ধার করে আহত শিশুদের।
ইতিমধ্যেই তিনজনকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। ওই বাড়িতে আরও বোমা মজুত থাকতে পারে বলে অনুমান স্থানীয় বাসিন্দাদের। ঘটনা প্রসঙ্গে আহত এক শিশুর আত্মীয় সইফুর রহমান বলেন, “স্কুলের পাশেই ওই নির্মীয়মাণ বাড়িতে ওরা খেলছিল। সেখানেই একটা লাল রঙের বলের মতো জিনিস ওরা দেখতে পায়। সেটা হাতেই নিতেই ফেটে যায়। কোথা থেকে ওই বোমা ওখানে এল আমরা বুঝতে পারছি না।” এদিকে এ ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। উদ্বেগ বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও।
এদিকে জখম শিশুদের দেখতে এসে বিস্ফোরণের ঘটনার সত্যতা মেনে নিয়েছেন মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি। তবে তিন শিশুই বর্তমানে বিপদমুক্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনাযর পিছনে কারা যুক্ত রয়েছে এবং কীভাবে এই ঘটনাটি ঘটল তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে রায়গঞ্জের ভাটোল ফাঁড়ির পুলিশ ইতিমধ্যেই দুজনকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করেছে বলে জানা যাচ্ছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় এক আহত শিশুর মা খুরশিদা খাতুন এই ঘটনায় আকবর আলি নামে এলাকার এক বাসিন্দাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। জমি সংক্রান্ত বিবাদের কারণেই বোমা মজুত রেখে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের খুনের চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ তাঁর।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহ দুয়েক আগে বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে ডালখোলাতে গুরুতর জখম হয়েছিল তিন শিশু। বোমা ফেটে গুরুতর জখম ৩ শিশুর মধ্যে রয়েছে ৪ বছরের বিকাশ ঋষি, ৫ বছরের সনু ঋষি এবং ১০ বছরের রবি ঋষি। তিনজনেই ডালখোলা থানা এলাকার বাসিন্দা বলে জানা যায়। সূত্রের খবর, এলাকারই একটি বাঁশবাগানে পাশে একটি বোমা পড়ে ছিল। শিশুর দল সেটি দেখে প্রথমে বুঝতে পারেনি। তাদের মধ্যে একজন বল ভেবে বোমাটি পকেটে ভরে। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। সঙ্গে সঙ্গে তীব্র শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা।