আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার রাজ্য সরকারের, এবার তৃণমূলে?

সৈকত দাস | Edited By: sreejayee das

Mar 01, 2021 | 6:04 PM

তৃণমূল নেতা কুরবান শাহ খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় আনিসুরের। হাইকোর্টে একাধিকবার খারিজ হয়েছে তাঁর জামিনের আবেদন। তবে এবার তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করত তৃণমূল।

আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার রাজ্য সরকারের, এবার তৃণমূলে?
ফাইল ছবি

Follow Us

পশ্চিমবঙ্গ: তৃণমূল নেতা কুরবান শাহ খুনের মামলায় জেলে থাকা বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার। এবার কি তৃণমূলে যোগ দেবেন একদা মুকুল-ঘনিষ্ঠ এই নেতা? একুশের ভোটের আগে চূড়ান্ত জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।

পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দু-বিরোধী বলে পরিচিত এই নেতার দূরত্ব তৈরি হয়। পরে এই বছরেই বিজেপিতে চলে যান আনিসুর। ঘটনাক্রমে ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর নবমীর দিন রাতে খুন হন পাঁশকুড়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি কুরবান শাহ। এই মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা আনিসুরের নাম। গ্রেফতার হন তিনি। সেই আনিসুরের বিরুদ্ধেই এদিন সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে নিল মমতার সরকার। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন বলেই ভোটমুখী বঙ্গে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে।

নন্দীগ্রাম আন্দোলনে কার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি এ নিয়ে কার্যত তরজায় জড়িয়েছে সেখানকার প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু বনাম তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষিতে গত জানুয়ারি মাসে নন্দীগ্রামের তেখালির জনসভা থেকে শুভেন্দুকে কটাক্ষ করার সময়ই তৃণমূল নেত্রীর মুখে উঠে আসে আনিসুরের নাম। সেই সময়ই মমতা বলেছিলেন, ‘‘আনিসুরকে অত্যাচার করে জেলে রেখে দিয়েছে।’’ স্পষ্টতই তাঁর নিশানায় ছিলেন দলত্যাগী শুভেন্দু অধিকারী।

জমি আন্দোলন পর্বে নিজের নন্দীগ্রামের লড়াই প্রসঙ্গে তৎকালীন তৃণমূল নেতা আনিসুরের নাম করেন মমতা। নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সেদিন কিছুতেই আমাকে নন্দীগ্রামে যেতে দেবে না। আমি তখন আমার এক সহকর্মী যাকে অত্যাচার করে আজও জেলে রেখে দিয়েছে, পাঁশকুড়ার ছেলে আনিসুর, তাকে বললাম তোর স্কুটার বা বাইক আছে? কী করব বললাম না। বাইকে করে আমি আর ও বেরিয়ে পড়লাম।’’

নিজের দলের নেতা খুনে অভিযুক্ত বিজেপি নেতার নাম নেত্রীর মুখে শুনে অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। বিজেপি নেতার প্রশংসা শুনে মৃত কুরবানের পরিবারও সেদিন বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। তবে
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা ছিল আনিসুরকে অত্যাচার এবং তাঁকে জেলে বন্দি রাখার বিষয়ে তৃণমূল নেত্রী নাম না করে আসলে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেই নিশানা করেছেন। কারণ, আনিসুর গোষ্ঠীর সঙ্গে শুভেন্দু গোষ্ঠীর গণ্ডগোল সর্বজনবিদিত। আবার এই সভার অব্যবহিত পরে শুভেন্দুও তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন মমতাকে। তাঁর কটাক্ষ ছিল, তিনি রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী নন। তাই প্রভাব খাটিয়ে কাউকে জেলে আটকে রাখতে পারেন না। এখন ভোটের আগে সেই আনিসুরের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের মামলা প্রত্যাহারকে অনেকেই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন।

আরও পড়়ুন: মালদায় ‘যোগী-ঝটকা’র আশায় বিজেপি, বেতোয়াক্কা তৃণমূল

সাম্প্রতিক অতীতে রাষ্ট্রদ্রোহিতা-সহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ফেরার মোর্চা নেতা বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করেছে সরকার। তারপর তিনি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সরকারকে সমর্থনের ডাক দিয়েছেন। এবার শুভেন্দু-বিরোধী নেতা আনিসুরকে দলে টেনে কি পূর্ব মেদিনীপুর বিজেপিকে ধাক্কা দেওয়ার কথা ভাবছে তৃণমূল? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।

Next Article