মালদায় ‘যোগী-ঝটকা’র আশায় বিজেপি, বেতোয়াক্কা তৃণমূল
মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল, কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, নিহার ঘোষের মতো মালদহ জেলা তৃণমূলের চেনা মুখ যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে
মালদহ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড সমাবেশের নিরবচ্ছিন্ন প্রস্তুতি নিতে মঙ্গল-বুধবারের অমিত-সফর মুলতুবি করেছে দিল্লি বিজেপি (BJP)। তবে মঙ্গলবার বিজেপির স্টার ক্যাম্পেনার যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) সভা করবেন মালদহের গাজলে। আর সেখানেই তৃণমূলের জন্য থাকছে চমকের পর চমক। এমনটাই দাবি মালদহ জেলা বিজেপির। জানা যাচ্ছে, আগামিকালই উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির স্টার ক্যাম্পেনারের হাত থেকে গেরুয়া পতাকা তুলে নেবেন মালদহ জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা।
সোমবার রাত পোহালেই মালদার গাজোলে কলেজ মাঠে যোগী আদিত্যনাথের জনসভা। তাঁর সঙ্গে থাকছেন অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। এছাড়াও থাকছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। এই সভাতেই থাকছে চমক। জেলার প্রথম সারির বেশ কিছু তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন বলে খবর। এই প্রেক্ষিতে বেশ কিছু নামও সামনে উঠে আসছে। যেমন, মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলের নাম শোনা যাচ্ছে। তেমনি রয়েছেন কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, নিহার ঘোষের মতো মালদহ জেলা তৃণমূলের চেনা মুখ। এছাড়া কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর প্রধান অনুগামী বলে পরিচিত প্রাক্তন কাউন্সিলর কার্তিক সিং-সহ পঞ্চাশ জন তৃণমূল কর্মীর বিজেপিতে যোগদান প্রায় চূড়ান্ত বলে খবর। এখানেই শেষ নয়। মঙ্গলবারেই যোগী সভায় বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন ইংরেজবাজার পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর। থাকছেন পঞ্চায়েত স্তরের একাধিক নেতা।
এদিকে যোগী সভার প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। সেজে উঠেছে গাজোল কলেজ মাঠের বিজেপি মঞ্চ। এই কাজের কাজের তদারকি করছেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা প্রাক্তন বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস। রয়েছেন বিজেপির নেত্রী সাগরিকা সরকার-সহ অন্যান্য সদস্য। বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডলের দাবি, “বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে এই জনসভায়।” মঙ্গলের সভার পরেই তৃণমূল মালদহ জেলায় সাইনবোর্ডে পরিণত হবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। যদিও বিষয়টিকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল। মালদহ জেলা তৃণমূলের নেত্রী চৈতালি সরকারের কটাক্ষ, “হাথরসের ঘটনার নায়ক যোগী আদিত্যনাথ। তিনি এলে তৃণমূলের কোনও ফারাক পড়বে না। উলটে মহিলারাই বিজেপি থেকে মুখ ফেরাবে।” যোগীর সবায় আখেরে লাভ তৃণমূলেরই হবে বলে দাবি তাঁর।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে মালদহে খাতা খুলতে পারেনি তৃণমূল। ১২ টি বিধানসভা আসনের ৮টি পায় কংগ্রেস, ২টি সিপিএম এবং একটি আসন পায় বিজেপি। নির্দল পায় একটি। এদিকে একসময়ে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তৃণমূল ছাড়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মালদহের একটি ব্লকের পাঁচ অঞ্চল সভাপতি ইস্তফা দেন। এখন একুশের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও তৃণমূল থেকে একাধিক নেতার গেরুয়া শিবিরে যোগদানের বড় ভূমিকা থাকতে পারে শুভেন্দুর। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।