West Bengal Election 2021 Opinion Poll: শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যাওয়া কি তৃণমূলের পক্ষে বড় ধাক্কা?
১০ হাজার মানুষের মধ্যে এই সমীক্ষা চালিয়ে বাংলার মুড বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। তাতে উত্তরদাতাদের কাছে একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল যে, শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বিজেপিতে যোগদান কি গেরুয়া শিবিরের পক্ষে লাভের এবং তৃণমূলের জন্য ক্ষতিকর হবে কিনা।
পশ্চিমবঙ্গ: নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর একেবারে দোরগোড়ায় এসে বাংলার ভোটারদের মনোভাব জন্য ফের রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা চালিয়েছে TV9 বাংলা ও পোলস্ট্র্যাট। ১০ হাজার মানুষের মধ্যে এই সমীক্ষা চালিয়ে বাংলার মুড বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। তাতে উত্তরদাতাদের কাছে একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল যে, শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বিজেপি (BJP)-তে যোগদান গেরুয়া শিবিরের পক্ষে লাভের এবং তৃণমূলের (TMC) জন্য ক্ষতিকর হবে কিনা। এই প্রশ্নের জবাবে ৩৪.৫ শতাংশ উত্তরদাতা বলছেন তৃণমূলের পক্ষে অবশ্যই এটা বড় ধাক্কা। ১৫.৪ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন শুভেন্দুর গেরুয়া-যোগে সামান্য প্রভাব পড়বে তৃণমূলে। অন্যদিকে ৩৯.৯ শতাংশ মানুষ বলছেন শুভেন্দুর তৃণমূলত্যাগে একদমই প্রভাব পড়বে না ঘাসফুল শিবিরে। এই প্রশ্নের জবাবে, জানি না বলেছেন ১০.২ শতাংশ উত্তরদাতা।
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন নন্দীগ্রামের পদত্যাগী বিধায়ক। তার আগে দীর্ঘদিন ধরে শুভেন্দুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা জিইয়ে ছিল। শুভেন্দুর মানভঞ্জনে একান্ত বৈঠক করেছিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। কিন্তু তৃণমূলের পক্ষে সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। অবশেষে ১৯ ডিসেম্বর শীতের দুপুরে শাহি-সভায় শুভেন্দু গেরুয়া পতাকা তুলে নিয়ে হুঙ্কার দেন ‘ভাইপো হঠাও।’ তার পর একের পর এক সভা থেকে নাম না করে তৃণমূল সাংসদ তথা বর্তমানে বকলমে সে দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেককে নিশানা করেছেন। পাল্টা শুভেন্দুর দিকেও আঙুল তুলেছে তৃণমূল। দলত্যাগী নেতাকে ‘গদ্দার’, ‘বেইমান’ ইত্যাদি শব্দে বিঁধেছেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব একেবারেই মানেননি যে একুশের ভোটে শুভেন্দু-ফ্যাক্টর কাজ করতে পারে।
কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ছেড়ে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তই বুঝিয়ে দিয়েছে, শুভেন্দুকে তাঁরা মোটেই হালকাভাবে নেননি। পাশাপাশি মমতাকে হাফ লাখ ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ জানানো শুভেন্দুও এবারও নন্দীগ্রাম থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে তিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করতেই মমতা নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তবে মমতাকে তিনি হারাতে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: West Bengal Election 2021 Opinion Poll: মোদীর বঙ্গ সভার ফলে কি বিধানসভা ভোটে লাভবান হবে বিজেপি?
তৃণমূল ছাড়ার আগে শুধু মন্ত্রী হিসেবেই নন একাধিক জেলার দলীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাই শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয়, জঙ্গলমহল থেকে মুর্শিদাবাদ, মালদহ- একাধিক জেলায় তাঁর আলাদা জনভিত্তি রয়েছেই। তাই তাঁর ইস্তফার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব দল ছেড়েছেন। এর মধ্যে শুভেন্দু ফ্যাক্টর কতটা কাজ করবে বিজেপির পক্ষে, তৃণমূলকেই বা কতটা বেগ দেবেন তিনি, তা বুঝতে হলে আগামী ২ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ওপিনিয়ন পোলের মাধ্যমে কেবল একটা আভাস বা অনুমান পাওয়া যায় যে ভোটের ফলাফল কেমন হতে পারে। তবে এটাই যে হতে চলেছে তা কখনওই বলা যাবে না। কারণ, বর্তমান রাজনৈতিক আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে এই ওপিনিয়ন পোল TV9 বাংলা প্রকাশ করতে চলেছে। রাজ্যে আট দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে পরিবেশ-পরিস্থিতি যে কোনও সময় বদলে যেতে পারে। এর সঙ্গে বাস্তবের ফলাফলের ফারাক কয়েক শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।