
কলকাতা: বঙ্গবাসীর জন্য সুখবর, শীঘ্রই আরও ৪টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু হতে চলেছে রাজ্যে। শিয়ালদহ-পুরী, হাওড়া-পটনা, হাওড়া-রাঁচি, হাওড়া-বারাণসী – আগামী দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে এই চারটি রুটে আরও চারটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হতে পারে। সোমবার (৩ এপ্রিল) পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা জানিয়েছেন, এই রুটগুলিতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর প্রস্তাবে কার্যত সম্মতি মিলে গিয়েছে। কয়েকটি বাধা এখনও রয়েছে। যদিও কবে থেকে এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি চালু হতে পারে, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি। বর্তমানে রাজ্যে একটিই বন্দে ভারত সেমি হাইস্পিড ট্রেন চালু হয়েছে। ২০২২-এর ৩১-এ জানুয়ারি এই ট্রেনটির যাত্রার সূচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শুধু তাই নয়, হাওড়া থেকে দিল্লী পর্যন্ত ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে চলা আরও একটি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। মূলত, রাজধানী এক্সপ্রেসের রুটেই এই হাই স্পিড ট্রেন চলবে বলে প্রাথিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত বঙ্গের প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনটিই ঘন্টা প্রতি ১৩০ কিলোমিটারের বেশি গতি তুলতে পারছে না। অরুণ অরোরা জানিয়েছেন, মাটির প্লাস্টিসিটি অর্থাৎ, ফাটল না ধরে মাটির বিকৃতির মধ্য দিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কম হওয়ার কারণেই সেমিহাইস্পিড ট্রেনের গতি এর বেশি তোলা যাচ্ছে না। হাই স্পিড ট্রেনের সহায়ক রেল ট্র্যাক বসানোর জন্য যে ধরনের মাটি দরকার, তা এখানে নেই। ফলে, হাওড়া থেকে এনজেপি যাওয়ার পথে ট্রেনটির গতি কোথাও ১১০ কিমি প্রতি ঘণ্টা, কোথাও আবার ১২৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা থাকছে। বাকি পথ বন্দে ভারত এক্সপ্রেসটি ঘণ্টা প্রতি ১০০ কিলোমিটার গতিতেই যাচ্ছে।
তবে শুধু মাটির প্রকৃতি নয়, গতির ঝড় তোলার পথে বাধা সৃষ্টি করছে লাইনের দুই ধারে জবরদখল করে রাখা জমি। ফলে, দুর্ঘটনা এড়াতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের লাইনের পাশে যে পাঁচিল তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেটাও করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে এখনও সর্বোচ্চ গতিতে চলতে পারছে না বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার বলেছেন, “রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে বারবার কথা হয়েছে। কিন্তু জবর দখল তোলার সময় স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলি যেভাবে বাধা দিচ্ছে, তাই নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। বেশ কয়েকটি জায়গায় আরপিএফ জবরদখল তুলে দিয়েছে। কিন্তু, এই বিশাল রুটে এখনও বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা রয়েছে।” এই সমস্যার জন্যই হাওড়া-দিল্লি হাইস্পিড ট্রেন তৈরির পরিকল্পনাও ব্যাহত হচ্ছে। জবরদখল সমস্যা এতটাই চরমে যে, সিদ্ধান্ত হওয়ার পরও প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন সম্ভবপর হচ্ছে না। রেলে তরফে এই জবরদখল তুলে দেওয়ার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এই সমস্যা অত্যন্ত গভীরে বিস্তৃত বলে জানচ্ছেন রেলকর্তারা।