ভোট আবহে নির্বাচন কমিশনের নজরে পলাতক আসামীরা, ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে নাম
আইনজীবীদের একাংশের দাবী, এই ব্যবস্থা অন্য সময়েও বহাল থাকলেও নির্বাচন কমিশন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যেই এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
উত্তর দিনাজপুর: বঙ্গে নির্বাচনের শুরু থেকে কড়া কমিশন। এবার দাগী আসামীদের উপর নজর দিতে বিশেষ পদক্ষেপ করছে নির্বাচন কমিশন।
পুলিশ সূত্রে খবর, একাধিকবার সমন জারির পরও আদালতে গরহাজির থাকায় এবারে বেশকিছু পলাতক দাগী আসামীর নাম বাদ যাচ্ছে ভোটার তালিকা থেকে। ইতিমধ্যেই আদালতের নির্দেশে জেলা পুলিশ প্রশাসন জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলা শাসকের কাছে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।
প্রশাসন সুত্রে খবর, বিগত বছরগুলিতে অভিযুক্তদের নামে আদালতের জারি করা সমনের পরেও যারা এখনো পলাতক তাদের বিরুদ্ধে আদালতের জারি করা ওয়ারেন্ট অফ অ্যারেস্ট এ্যান্ড পোক্লামেশন এ্যাটাচমেন্টের তালিকা তৈরি করে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে দেওয়া হয়েছে।
এ পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরে প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার আসামীর নাম ছিল। যাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ছ’শ জন এমন আসামী যারা এখনও পলাতক। আর এই সংখ্যাটা উত্তরবঙ্গের প্রান্তিক জেলা হিসেবে অত্যান্ত বেশি বলে দাবী জেলা পুলিশ প্রশাসনের। আর এর মধ্যে এই ডব্লিউপিএ-র তালিকাভুক্ত এখনো পর্যন্ত প্রায় ৪১ জন জেলাবাসী অভিযুক্তদের নাম রীতি মেনে ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে চলেছে।
নির্বাচনের আগে বিষয়টি উল্লেখযোগ্য বলে দাবী ওয়াকিবহাল মহলের। কারণ, এই পলাতক আসামীদের মধ্যে কেউ হয়ত শাসক শিবিরের, কেউ বা বিরোধী শিবিরেরও। তাই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: প্রচারে নেই জেলা নেতৃত্ব, ‘বহিরাগত’ কৌশানীর সাফাই, ‘এক পরিবারে পাঁচটা বাসন থাকলে আওয়াজ তো হবেই’
স্থানীয় কংগ্রেসের জেলা সহ সভাপতি পবিত্র চন্দ ও বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেছেন, “কমিশনের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শাসক দলের আশ্রয়ে অনেক অপরাধ হয়েছে। অনেকেই শাসকের ছত্রছায়ায় ক্রাইম করে পলাতক তকমা নিয়েছে। এটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। তবে শুধু ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়াই নয়। দাগী আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কড়া ব্যবস্থা নেওয়া আর প্রত্যেক বুথেই যাতে পর্যাপ্ত বাহিনী থাকলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে।”
তৃণমূল জেলা মুখপাত্র সন্দীপ বিশ্বাসের দাবী, প্রশাসন আইন মেনেই চলবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন যেন হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।
আইনজীবীদের একাংশের দাবী, এই ব্যবস্থা অন্য সময়েও বহাল থাকলেও নির্বাচন কমিশন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যেই এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত আসামীরা যাতে নির্বাচনের সময় গন্ডোগোল বা কোনও সমস্যা তৈরি না করতে পারে সেইজন্যেই এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে, নির্বাচনে এর কতটা প্রভাব পড়বে সেইটিই দেখার।
আরও পড়ুন: নতুন প্রার্থীকে ‘না-পসন্দ’, কোন্দল সামলাতে মাঠে কেষ্ট