শিল্পাঞ্চলে ফের ধস, মাটির তলায় আস্ত বাড়ি, আশঙ্কায় স্থানীয়রা

এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের দাবি, এর আগে একাধিকবার ধস নামলেও ইসিএল সামান্য মাটি ভরাট করেই দায় সেরেছে। ধসের কারণে এলাকার বেশ কয়েকটি কুয়োও শুকিয়ে গিয়েছে।

শিল্পাঞ্চলে ফের ধস, মাটির তলায় আস্ত বাড়ি, আশঙ্কায় স্থানীয়রা
বরাকরে নামল ধস, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Feb 03, 2021 | 8:17 PM

আসানসোল : মাঝরাতে হঠাৎ নামল ধস (Landslide)। বরাকরের নবিনগরে ধস নেমে ফাটল ধরল বেশ কয়েকটি বাড়িতে। মাটির নীচে চলে যায় গোটা একটি বাড়ি। আতঙ্কে স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলের পাশেই রয়েছে বিসিসিএলের কোলিয়ারির মুখ্য কার্যালয়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার, সকাল সাতটা নাগাদ বিকট আওয়াজ শুনতে পান বাসিন্দারা। দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাড়ি বসে গিয়েছে। ধসের (Landslide)  প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাঁচটি বাড়ি। দুর্ঘটনায় কেউ মারা না গেলেও প্রবল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে স্থানীয়দের। রুকসানা পারভিন নামে এক বাসিন্দার বাড়ি পুরোপুরি মাটির তলায় চলে যায়।

আরও পড়ুন :  ‘লালার কীর্তি’ জানতে কয়লা খনিতে সিবিআই

রুকসানা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত থেকেই অল্প অল্প ফাটল ধরতে শুরু করেছিল। বুধবার সকালে ফাটল আরও বেড়ে যায়। ধস (Landslide) কবলিত হয়ে প্রায় ৬ ফুট মাটির তলায় চলে যায় বাড়িটি। তাড়াহুড়োতে কিছু বোঝার আগেই জিনিসপত্র, টাকাপয়সা সবই মাটির তলায় চলে যায়। পুরোপুরি গৃহহীন হয়ে পড়েছেন রুকসানা।

আরও পড়ুন : কয়লাকাণ্ড: ‘লালার কীর্তি’ জানতে আজও খনিতে সিবিআই, সঙ্গী বিশেষজ্ঞরা

ধস নামার পরেই ঘটনাাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ। গোটা এলাকাটি ঘিরে দেওয়া হয়। ধস কবলিত এলাকার গলির মুখ আটকে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাশেই কোলিয়ারি রয়েছে। সেখান থেকে নির্বিচারে কয়লা তোলা হচ্ছে। ফলে ক্রমাগত ধস হচ্ছে ছোট থেকে বড়। যদিও, ইসিএলের এক রেসকিউ কর্তা জানিয়েছেন কী কারণে এভাবে ধস নামছে তা খতিয়ে দেখা হবে। এলাকার মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করবে প্রশাসন এমনটাই জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন : ভূমিকম্প প্রবণ উত্তরবঙ্গ, প্রবল কম্পনে বাঁচার মহড়া প্রশাসনের

এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের দাবি, এর আগে একাধিকবার ধস নামলেও ইসিএল সামান্য মাটি ভরাট করেই দায় সেরেছে। ধসের কারণে এলাকার বেশ কয়েকটি কুয়োও শুকিয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, বরাকরে ধস নামা এই প্রথম নয়। ২০০৬ সাল থেকে ধসকবলিত ঘোষণা করা হয়েছে বরাকরকে। বরাকর বিসিসিএল খনি অধ্যুষিত। অবৈধ ভাবে দীর্ঘদিন ধরে কয়লা তোলার ফলেই এই বিপত্তি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

গত বছর মার্চ মাসেই ধস নেমেছিল আসানসোলের বারাবনিতে। সেবার বরাত জোরে রক্ষা পায় একটি পরিবার। পরবর্তীতে এপ্রিল-জুন-জুলাই মাসে পরপর ধস নামে আসানসোলের নানা এলাকায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খনির এত কাছাকাছি এলাকায় এত ঘনজনবসতি থাকা কাম্য নয়। এছাড়া, যে হারে অবৈধ খনন কার্য চলে তা বড় বিপত্তি ডেকে আনতে পারে।