পা থেকে কোমর অবধি ১২টা হাড় ভাঙা, ঝুলছে চোয়াল, অকেজো ফুসফুস! প্লেন ক্র্যাশের পর কী অবস্থা হয় অ্যানেট হার্ফকেন্সের

এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে টিভির পর্দায় ভাইরাল ঘটনার একের পর এক ছবি এবং ভিডিয়ো। একের পর এক আহতদের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। বেশিরভাগ দেহ সম্পূর্ণ কালো হয়ে গিয়েছে।

পা থেকে কোমর অবধি ১২টা হাড় ভাঙা, ঝুলছে চোয়াল, অকেজো ফুসফুস! প্লেন ক্র্যাশের পর কী অবস্থা হয় অ্যানেট হার্ফকেন্সের

Jun 12, 2025 | 4:50 PM

কেউ হয়তো বাড়ি ফিরছিলেন, কেউ যাচ্ছিলেন কাজের সূত্রে। কেউ হয়তো যাচ্ছিলেন ছুটি কাটাতে। কেউ অন্য কোনও কাজে। বাড়ির লোককে কথা দিয়েছিলেন ফিরে আসবেন। কিন্তু কে জানত আকাশে ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই নেমে আসবে এত বড় বিপর্যয়? গুজরাটের মেঘানিনগর এলাকায় এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনার ফ্লাইট এআই-১৭১ ভেঙে পড়ার ঘটনায় ক্রু মেম্বার সহ প্রায় ২৪২ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে ওই বিমানে ছিলেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানিও। কী অবস্থা তাঁদের? শেষ পাওয়া তথ্য অনুসারে যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ঘটে থাকতে পারে এই দুর্ঘটনা। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে ‘MAYDAY’ কল করা হয়েছিল পাইলটকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। টেক অফ করার মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যে ভেঙে পড়ে লন্ডনগামী বিমান। ভেঙে পড়ার সময় বিমানের গতিবেগ ছিল ৩২০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।

এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে টিভির পর্দায় ভাইরাল ঘটনার একের পর এক ছবি এবং ভিডিয়ো। একের পর এক আহতদের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। বেশিরভাগ দেহ সম্পূর্ণ কালো হয়ে গিয়েছে। শরীর থেকে পরনে থাকা জামাকাপড় আলাদা করা যাচ্ছে না। দেখে বোঝা দায় প্রাণ আছে না নেই। যার ছবি দেখলেই গায়ে কাঁটা দেয়, শিউরে উঠতে হয়। কতটা ভয়ানক হয় এই অভিজ্ঞতা? মৃত্যুর মুখ থেকে ভাগ্যের জোরে ফিরে আসা কয়েকজন জানিয়েছিলেন তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। কেমন হয় সেই মৃত্যুযানের সওয়ারি?

অ্যানেট হার্ফকেন্সের এবং তাঁর বাগদত্তা উইলিয়াম ভান দের পাস হো চি মিন শহর থেকে যাচ্ছিলেন ভিয়েতনামিজ কোস্টে। ছয় মাস টানা কাজের সূত্রে দুটি আলাদা শহরে থাকার পরে একসঙ্গে ছুটি কাটাতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু প্রেমের যাত্রা যে মৃত্যু যাত্রায় বদলে যাবে তা কে জানত। হঠাৎ করেই গোঁত খেয়ে নিচের দিকে নামতে শুরু করে প্লেনটি। ধাক্কা খায়। পাশে থাকা উইলিয়াম শুধু হাত ধরে বলেছিল আমি এটা চাইনি। তারপরেই আরও খাদে পড়তে শুরু করে প্লেন। অ্যানেট হার্ফকেন্সের জানান সবটা অন্ধকার হয়ে যায়। যখন তাঁর জ্ঞান ফেরে দেখেন পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে ভিয়েতনামের জঙ্গলে ঝুলছে প্লেনটি। তাঁর পাশের সিটে মুখে হাসি নিয়ে মুখে হাসি নিয়ে মৃত প্রেমিক পাস। হার্ফকেন্সের উপরে পড়ে রয়েছে অপরিচিত কোনও ব্যক্তির মৃতদেহ।

হার্ফকেন্স জানান এরপর কী ভাবে আমি নিজেকে জঙ্গল থেকে বাইরে নিয় এসেছিলাম জানি না। জঙ্গল ছেড়ে বাইরে আসতে তাঁর সময় লেগেছিল প্রায় ৮ দিন। হার্ফকেন্স জানান, কোমর এবং পায়ের মোট ১২টা হাড় ভেঙে ছিল। চোয়াল ঝুলছিল, কোলাপ্স করে যায় একটি ফুসফুসও। কোনওক্রমে হামাগুড়ি দিয়ে প্লেন থেকে বেড়িয়ে আসেন তিনি। সেদিন হয়তো ভাগ্য সহায় ছিল তাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন হার্ফকেন্স।

১৯৯৭ সাল, দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভেঙে পরে বিমান। ১৮১ জনকে নিয়ে যাত্রা করা বিমানটির প্রায় সকলের মৃত্যু হয়। জেজু এয়ারের ওই বিমানের একমাত্র জীবিত ব্যক্তি হলেন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট লি। যাত্রীদের সাহায্য করার জন্য বিমানের টেল এন্ডে ছিলেন তিনি। ভেঙে গিয়েছিল বাঁ কাঁধ। আঘাত পেয়েছিলেন মাথাতেও। হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি জানিয়েছিলেন কীভাবে হাসপাতালে এসেছেন কিছুই মনে নেই তাঁর।