কলম্বিয়া: ঘন জঙ্গলের মাঝে ভেঙে পড়েছিল একটি বিমান। জনবসতি থেকে এত দূরে বিমানটি ভেঙে পড়েছিল যে সেটি খুঁজে পেতেও বেশ কষ্ট করতে হয় সে কলম্বিয়ার প্রশাসনকে। ভাঙা বিমানের পাশ থেকেই মেলে তিনজনের মৃতদেহ। কিন্তু বাকিরা কোথায়? চার শিশুর যে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি, তা বুঝে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় জোর তল্লাশি। ঘন জঙ্গলের মধ্যে কোথায় হারিয়ে গেল শিশুরা? এতদিন পর আদৌ তাদের ফিরে পাওয়া সম্ভব? এমন আশঙ্কাই তৈরি হয়েছিল। কিন্তু অভিধানে ‘মিরাকল’ বলেও একটা শব্দ আছে। তেমনটাই হয়েছে এ ক্ষেত্রে। ৪০ দিন পর ঘন জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চার শিশুকে।
শনিবার কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুসতাভো পেদ্রো টুইট করে ওই চার শিশুর উদ্ধার হওয়ার খবর প্রকাশ করেছেন। প্রায় ৫ সপ্তাহ ধরে তল্লাশি অভিযান চালানোর পর চারজনকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্ট টুইটে লিখেছেন, ‘গোটা দেশের জন্য আনন্দের খবর।’ তাঁর প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ওই চার শিশুর ছবি। এভাবেও যে বেঁচে থাকা যায়, সেই দৃষ্টান্ত ওই শিশুরাই স্থাপন করল বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট।
উদ্ধার হওয়া শিশুরা হল ১৩ বছরের লেসলি জ্যাকম্বেয়ার মুকুটি, ৯ বছরের সোলেনি জ্যাকম্বেয়ার মুকুটি, ৫ বছরের টিয়েন রানক মুকুটি ও ক্রিস্টিন রানক মুকুটি নামে আরও এক শিশু। জানা গিয়েছে, গত ১ মে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে ওই সিঙ্গল ইঞ্জিনের বিমানটি। বিমানে মোট ৬ যাত্রী ছিলেন। ইঞ্জিনের সমস্যার জেরেই ঘটে দুর্ঘটনা।
আমাজনের রেনফরেস্টের ভিতরে সেই ভেঙে পড়া বিমানের খোঁজ মেলে গত ১৬ মে। শিশুদের মা ও বিমানের চালক সহ মোট তিনজনের দেহ উদ্ধার হয় ঘটনাস্থল থেকে। কিন্তু শিশুদের খোঁজ পাওয়া যায়নি সে দিন। ৪০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর তাদের বাঁচার আশা আর নেই বলেই মনে করেছিলেন অনেকে। তা সত্ত্বেও চলে তল্লাশি। অবশেষে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আপাতত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে তাদের।