নয়া দিল্লি : আমেরিকা ও কানাডার সীমান্তে প্রবল ঠাণ্ডায় জমে মৃত্যু হল এক ভারতীয় পরিবারের চার সদস্যের। মৃতদের মধ্যে রয়েছে এক শিশুও। এই ঘটনায় এক মানব পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন প্রশাসন। মনে করা হচ্ছে পাচারের জন্য ওই চার ভারতীয়কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পরে কোনও কারণে তাঁদের ফেলে রেখে পালায় পাচারকারীরা। এরপর প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় ৪৭ বছর বয়সী স্টিভ শ্যান্ড নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। টুইটে এই ঘটনা প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
শুক্রবার বিদেশমন্ত্রী টুইটে জানিয়েছেন, আমেরিকা ও কানাডার সীমান্তে এক শিশু সহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। দুই দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর দুই দেশের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে ভারত সরকার।
Shocked by the report that 4 Indian nationals, including an infant have lost their lives at the Canada-US border. Have asked our Ambassadors in the US and Canada to urgently respond to the situation.
— Dr. S. Jaishankar (@DrSJaishankar) January 21, 2022
ওই চারজনের দেহ উদ্ধারের পর আমেরিকার সীমান্তরক্ষীদের চোখে পড়ে আরও পাঁচজন ওই এলাকা পায়ে হেঁটে এগিয়ে চলেছেন। তাঁরাও ভারতীয় ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা সীমান্ত পার করতেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের কাছে একটি ব্যাগপ্যাক পাওয়া গিয়েছে, যাতে রয়েছে ওই মৃতদের পরিবারের কিছু সামগ্রী। যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ওই একই দলে ছিলেন, পরে কোনও ভাবে দলছুট হয়ে যান। দুই ভারতীয়কে সীমান্ত পার করানোর সময়ই হাতেনাতে ধরা পড়েন স্টিভ শ্যান্ড। কোনও বৈধ নথি ছাড়াই ওই দুই ভারতীয়কে সীমান্ত পার করাচ্ছিলেন তিনি।
রয়টার্সে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকার মিনেসোটার সীমান্তে ওই চারজনের দেহ পাওয়া গিয়েছে। চারজনের মধ্যে রয়েছেন এক ব্যক্তি, এক মহিলা, এক তরুণ ও এক শিশু। ৪০ ফুট উঁচু এলাকায় পড়েছিল তাঁদের দেহ। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে ঠাণ্ডায় জমেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। রয়াল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার জেন ম্যাকল্যাচি জানান, শুধু অমানবিক ঠাণ্ডাই নয়, চারপাশে ধূ ধূ প্রান্তর আর ঘন অন্ধকার পেরোতে হয়েছিল ওই চারজনকে। ওই এলাকায় তাপমাত্রা প্রায় মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যে পাঁচজন ভারতীয়কে সীমান্তরক্ষীরা উদ্ধার করেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, কেউ একজন এসে তাঁদের নিয়ে যাবে, এমনটাই কথা ছিল। সেই জন্য ১১ ঘণ্টা হেঁটে এসেছেন তাঁরা। স্টিভ শ্যান্ড নামে ধৃত ওই ব্যক্তি এর সঙ্গে যুক্ত বলেই অনুমান পুলিশের।