কাবুল: বুধবারই এক জোরালো ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে, মৃতের সংখ্যা আরও অনেকটাই বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বের পাকতিকা প্রদেশের গয়ন জেলাতেই ভূমিকম্পের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে। এই এলাকার অধিকাংশ বাড়িই মাটির তৈরি। সেই সব বাড়ির ধংস্বস্তূপের নিচে এখনও অসংখ্য মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সঙ্গে জুড়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বুধবার রাত থেকেই ওই অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে। এমনিই এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম। তার উপর বৃষ্টিতে ভূমিধসে আক্রান্ত এলাকায় পৌঁছতেই পারছেন না উদ্ধারকারীরা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এক তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছেন, ওই এলাকায় তাঁদের কোনও উদ্ধারকারী দল পৌঁছতেই পারছেন না। ওই এলাকার রাস্তাগুলি এমনিতেই দুর্গম, চলাচল করতে সমস্যা হয়। গত ২০ বছরে দেশে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা থাকায় রাস্তাগুলি মেরামতও করা হয়নি। ভূমিকম্পের পর, সেই সমস্ত রাস্তা ভেঙেচুড়ে গিয়েছে। অল্প কিছু পাকা বাড়ি এই বিপর্যয়ের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু, এলাকার অধিকাংশ বাড়িই কাঁচা হওয়ায়, অধিকাংশ মানুষই এখন ভিটে ছাড়া। ভূমিকম্পের ফলে ওই পাহাড়ি এলাকার জায়গায় জায়গায় ধস নেমেছে। রাতের বৃষ্টি পরিস্থিতি আরও বিগড়ে দিয়েছে। কিন্তু তাঁদের কাছে খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। ভেঙে পড়েছে মোবাইল ফোনের টাওয়ারগুলিও। ফলে মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে পাকতিকা প্রদেশের তথ্য বিভাগের প্রধান মহম্মদ আমিন হুজাইফা জানিয়েছেন, বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকেই সাহায্য আসছে। কিন্তু, সেই সহায়তা বিপর্যস্ত মানুষদের কাছে পৌঁছে দেওয়াটা তাদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। বুধবার রাতের বৃষ্টিতে কোথও কোথাও বন্যাও দেখা দিয়েছে। প্রতিবেশী এলাকাগুলি থেকে বেশ কিছু এনজিও-ও উদ্ধারকাজে হাত লাগানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, বৃষ্টি তাদেরও উদ্যোগে বাধ সেধেছে। তারা জানিয়েছে, জুন মাসে আবহাওয়া এরকম হওয়ার কথা নয়। কখনও শিল পড়ছে, কখনও তুষাড়পাত হচ্ছে।
এই অবস্থায় দুর্গতদের সহায়তার জন্য, তালিবান সরকারের পক্ষ থেকে ১০০ কোটি আফগানি মুদ্রা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়দের ১ লক্ষ আফগানি করে এবং প্রত্যেক আহত ব্যক্তির নিকটাত্মীদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারত-পাকিস্তান সহ বেশ কয়েকটি দেশ, আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে। আফগান প্রশাসন আরও আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে। এদিন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াও সহায়তা পাঠআনোর আশ্বাস দিয়েছে।