নয়া দিল্লি: একসময়ে ভারতীয়দের পছন্দের পর্যটন কেন্দ্র ছিল মলদ্বীপ। হ্যাঁ, অতীতের কথাই বলা হচ্ছে, কারণ ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক বিরোধ ও সম্পর্কের অবনতির পর ভারতীয় পর্যটকরা মুখ ফিরিয়েছেন মলদ্বীপ থেকে। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে উঠেছে বয়কট মলদ্বীপের ডাক। মলদ্বীপের বুকিং ক্যানসেল করে সবাই ছুটছেন অন্য কোনও গন্তব্যে। মলদ্বীপের পর্যটন মন্ত্রকের তথ্য় অনুযায়ীও দেখা গিয়েছে, ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হওয়ার পর ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা ব্যাপক কমেছে। গত মার্চ মাসের তুলনায় এবারে ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা ৩৩ শতাংশ কমেছে।
মালে-র একটি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মলদ্বীপে ঘুরতে যাওয়া ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা ছিল ৪১ হাজার। সেখানেই ২০২৪ সালের মার্চ মাসে সেই সংখ্যাই কমে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ২২৪-এ। এক বছরের মধ্যে ৩৩ শতাংশ ভারতীয় পর্যটক কমেছে মলদ্বীপে।
মলদ্বীপে ভারতীয় পর্যটক কমার অন্যতম কারণই হল ভারত সরকারের পর্যটনের প্রচার। দেশের অন্দরেই পর্যটনের প্রচার করা হচ্ছে ভারত সরকারের তরফে, বিশেষ করে লাক্ষাদ্বীপের প্রচার করা হয়েছে। ভারতীয়রাও মলদ্বীপের বদলে লাক্ষাদ্বীপকেই বেছে নিয়েছেন।
২০২৩ সালের মার্চ মাস অবধি মলদ্বীপেের পর্যটনের ক্ষেত্রে সর্বাধিক আয়ে দ্বিতীয় স্থানেই ছিল ভারত। ১০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ছিল। সেখানেই বিতর্কের পর চলতি সপ্তাহে ভারত থেকে পর্যটনক্ষেত্রে আয় ৬ নম্বরে নেমে এসেছে। বর্তমানে মলদ্বীপের মার্কেটের মাত্র ৬ শতাংশ আয় ভারত থেকে হচ্ছে।
ভারত মুখ ফেরাতেই মলদ্বীপের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে চিন। ভারতীয় পর্যটক কমতেই, মলদ্বীপে হঠাৎ করে চিনা পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছরে চিন থেকে মলদ্বীপে ৫৪ হাজার পর্যটক ঘুরতে গিয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে মলদ্বীপে মোট ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৯৪ পর্যটক গিয়েছিল, এর মধ্যে চিন থেকেই ৩৪ হাজার ৬০০ জন পর্যটক এসেছিল। কিন্তু ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে ভারত থেকেই সর্বাধিক পর্যটক গিয়েছিল মলদ্বীপে। প্রতি বছর ২ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় পর্যটক ঘুরতে গিয়েছিল মলদ্বীপে।
প্রসঙ্গত, মলদ্বীপের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই ছিল ভারতের। ২০২৩ সালের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লাক্ষাদ্বীপ ঘুরতে যান। সেখানে লাক্ষাদ্বীপের পর্যটনের প্রচার করতেই মলদ্বীপ কটাক্ষ করতে শুরু করে। এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এরপরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের ডাক দিলে বিতর্ক আরও বাড়ে।