ব্যাংকক: আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারি, আসছে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ বা প্রেম দিবস। আর কে না জানে বসন্ত এসে গেলে, আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ কমে যায়। সে মনের হোক, কিংবা শরীরের। অকাল বসন্তে স্বয়ং ভোলানাথ কাবু হয়েছিলেন, তো মানুষ তো কোন ছাড়। প্রেম দিবসে কিশোর-কিশোরীরা কোনও অঘটন ঘটিয়ে ফেলতেই পারে। আর তা রুখতেই বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে থাইল্যান্ড সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র আগে বিনামূল্যে সাড়ে ৯ কোটি কন্ডোম বিতরণ করা হবে। থাই সরকার জানিয়েছে, এর মূল উদ্দেশ্য তিনটি – নিরাপদ যৌনতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, যৌনরোগ ছড়িয়ে পড়া রোধ করা এবং কিশোরী অবস্থায় অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা রোধ করা। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকেই এই সরকারি উদ্যোগ শুরু হচ্ছে।
এই উদ্যোগ সম্পর্কে থাই সরকারের মুখপাত্র রাচাদা ধনাদিরেক জানিয়েছেন, চারটি আকারে এই কন্ডোমগুলি পাওয়া যাবে। রাচাদা বলেছেন, “বিনামূল্যে কন্ডোম দেওয়ার উদ্যোগ যৌনরোগ প্রতিরোধে এবং জনস্বাস্থ্যের প্রচারে সহায়তা করবে।” থাইল্যান্ডের বিভিন্ন হাসপাতালের ফার্মেসি এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি থেকে কন্ডোম বিতরণ করা হবে। এর জন্য লাগবে সেই দেশের ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার কার্ড। এটি হল সেই দেশের প্রধান স্বাস্থ্য বিমা পরিষেবা। এই কার্ডধারীরা চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পান। এবার এই কার্ড থাকলে, আগামী এক বছর প্রতি সপ্তাহে বিনামূল্যে ১০টি করে কন্ডোম পাওয়া যাবে। থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল হেলথ সিকিউরিটি অফিস বা এনএইচএসও-র সেক্রেটারি-জেনারেল জাদেজ থামমাতাচারি জানিয়েছেন, লুব্রিকেটিং জেল-সহ কন্ডোম বিতরণ করা হবে।
এনএইচএসও জানিয়েছে, যারা বিনামূল্যে কন্ডোম পেতে চান, তাদের একটি বিশেষ স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন-এ নিজেদের নাম নিবন্ধন করতে হবে। তারপর নিজেদের পছন্দ মতো একটি ওষুধের দোকান, কমিউনিটি ক্লিনিক বা রাষ্ট্র পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেছে নিতে হবে। তারপর, সেখানে গেলেই হাতে হাতে কন্ডোম পাওয়া যাবে। আর যাদের স্মার্টফোন নেই, তারা থাই নাগরিক হিসেবে যে কোনও একটি পরিচয়পত্র দেখিয়ে নির্ধারিত পরিষেবা কেন্দ্রে বিনামূল্যে কন্ডোমের জন্য নাম নিবন্ধন করতে পারবেন।
এনএইচএসও আরও জানিয়েছে, অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ এবং সিফিলিস, গনোরিয়া, ক্ল্যামিডিয়া, সার্ভিকাল ক্যান্সার, এইচআইভি, এইডস-এর মতো যৌন সংসর্গের মাধ্যমে ছড়ানো রোগের সংক্রমণ রোধ করার জন্যই বিনামূল্যে কনডম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আসলে, একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে থাইল্যান্ডে ব্যাপকভাবে এসটিডি বা যৌন সংসর্গে ছড়িয়ে পড়া রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালে এই ধরনের যে রোগে আক্রান্ত যে রোগীদের সনাক্ত করা হয়েছিল, তাদের অর্ধেকেরও বেশি আক্রান্ত ছিলেন সিফিলিস এবং গনোরিয়া রোগে। আক্রান্তদের অধিকাংশের বয়স ছিল ১৫ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে।