লন্ডন: ব্রিটেনে অনুমোদন পেয়েছে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা প্রতিষেধক কোভিশিল্ড (Covishiled)। ভারতেও অনুমোদন পেতে চলেছে এই প্রতিষেধক। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই প্রতিষেধক সংক্রান্ত তথ্যগুলি…
বাকি প্রতিষেধকের থেকে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রতিষেধক এগিয়ে সহজলভ্যতার দিক থেকে। অন্যান্য প্রতিষেধকের তুলনায় দামও কম আর সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনাও কম কোভিশিল্ডের। প্রতি ডোজ় কোভিশিল্ডের দাম ৩.৪ ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় ২৫০ টাকারও কম।
ভারতের মতো বড় দেশে করোনা টিকাকরণের জন্য প্রতিষেধকের সংরক্ষণ একটা বড় সমস্যা। ফাইজ়ারের ক্ষেত্রে করোনা প্রতিষেধক সংরক্ষণ করতে হবে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড উষ্ণতায়। মডার্নার টিকাকেও সংরক্ষণ করতে হয় মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড উষ্ণতায়। সেদিক থেকে অনেক কম উষ্ণতাতেই সংরক্ষণ সম্ভব কোভিশিল্ডের। ২ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি উষ্ণতায় সংরক্ষণ করে এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া সম্ভব কোভিশিল্ড।
আরও পড়ুন: জিজ্ঞাসা: আপনি কি পাবেন ‘স্বাস্থ্য সাথীর’ সুবিধা? জেনে নিন এই তথ্যগুলো
ব্রিটেনে নতুন রূপে হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। যা ইতিমধ্যেই ব্রিটেন টপকে একাধিক দেশে থাবা বসিয়েছে। ভারতেও একাধিক ব্যক্তির শরীরে হদিশ মিলেছে ‘নয়া’ করোনাভাইরাসের। সেক্ষেত্রে নতুন ‘স্ট্রেনে’র বিরুদ্ধে কি কার্যকরী কোভিশিল্ড? এই প্রশ্নের উত্তরে বারবার আশার কথা শুনিয়েছে কোভিশিল্ডের নির্মাতারা। অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান পাস্কাল সরিয়ট জানিয়েছেন, নতুন ‘স্ট্রেনে’র বিরুদ্ধে কাজ করবে তাদের প্রতিষেধক। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, “এপর্যন্ত আমরা মনে করছি ভ্যাকসিন নতুন ‘স্ট্রেনে’র বিরুদ্ধেও কার্যকরী হবে। যদিও আমরা নিশ্চিত নই, পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: জিজ্ঞাসা: বিবাহযোগ্যাদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেবে রাজ্য সরকার, কীভাবে আবেদন করবেন, জানুন
ব্রিটিশ ফার্ম অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই প্রতিষেধক। ফাইজ়ারের পর কোভিশিল্ডকে অনুমোদন দিয়েছে ব্রিটেনের মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি। একাধিক সূত্র ও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ভারতেও দ্রুত অনুমোদন পেতে পারে এই করোনা প্রতিষেধক। ব্রিটেনে ফাইজ়ারের টিকা পেয়েছেন ৮ লক্ষ মানুষ। ব্রিটেন ইতিমধ্যেই ১০ কোটি অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন কেনার কথা জানিয়েছে। যার ৪ কোটি ডোজ় মার্চ মাসের মধ্যেই ব্রিটেনে পৌঁছে যাবে। জানুয়ারির ৪ তারিখ থেকে ব্রিটেনে শুরু হচ্ছে কোভিশিল্ডের টিকাকরণ।
আরও পড়ুন: জিজ্ঞাসা: টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগ নিয়ে নবান্নের বিজ্ঞপ্তি, জেনে নিন পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য
স্পাইক প্রোটিনের গঠনের উপর নির্ভর করে করোনা প্রতিষেধক তৈরি হয়েছে কোভিশিল্ড। ল্যান্সেট জার্নালে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে প্রতিষেধকটি নিরাপদ ও কার্যকরী। ল্যান্সেটে আরও জানানো হয়েছে, ২৩ হাজার ৭৫৪ স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে মাত্র ১ জনের শরীরে দেখা গিয়েছে ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তবে কোভিশিল্ডের কার্যকরিতা নিয়ে একবার বিতর্কও দেখা দেয়। নভেম্বরে নির্মাতারা দাবি করেছিল, ৭০ শতাংশ কার্যকরী কোভিশিল্ড। যখন মডার্না ও ফাইজ়ার ৯০ শতাংশেরও বেশি কার্যকরিতার দাবি তুলেছিল। পরবর্তীকালে দেখা যায় অর্ধেক ডোজ়েই ৯০ শতাংশ কার্যকর কোভিশিল্ড। কিন্তু ২ ডোজ়ে মাত্র ৬২ শতাংশ। তখন দুই ডোজ় নিয়ে সমীক্ষা চালায় সংস্থা। তারপর অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান সরিয়ট জানিয়েছিলেন, দুই ডোজ়েই অধিক কার্যকরী কোভিশিল্ড।
আরও পড়ুন: জিজ্ঞাসা: মেট্রো-ট্রেন-বাসে একটাই কার্ড! জেনে নিন ‘ন্যাশনাল কমন মবিলিটি কার্ড’