মস্কো : শনিবার রাশিয়া ‘পরিকল্পিত অনুশীলনের’ অংশ হিসেবে তার সর্বশেষ হাইপারসনিক, ক্রুজ এবং পারমাণবিক সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফলভাবে পরীক্ষা করেছে। ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার এই সামরিক মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়া-ইউক্রেনের ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যে এই মহড়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র এক দেশ থেকে অন্য দেশে পারমাণবিক অস্ত্র ছুঁড়তে সক্ষম। ইউক্রেন সীমান্তে যখন উপস্থিতি বাড়াচ্ছে রুশ সেনাবাহিনী সেমতাবস্থায় রাশিয়ার এই ধরনের সামরিক মহড়া ক্ষমতা প্রদর্শনেরই অংশ বলে মনে করছেন অনেকে। এবং সেই মহড়ায় পুতিনের উপস্থিতি যথেষ্ট তাৎপর্য বহন করে।
রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা আরআইএ নোভোস্তি (RIA Novosti) এবং ইন্টারফ্যাক্স (Interfax) অনুসারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন যে, সামরিক মহড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। পুতিন এবং বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার লুকাশেনকো ক্রেমলিন থেকে এই মহড়ায় নজর রাখছেন। ক্রেমলিনের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “সমস্ত ক্ষেপণাস্ত্র তাদের কার্যক্ষমতার উদ্দেশ্য নিশ্চিত করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করছে।” এই মহড়ায় Tu-95 বোমারু বিমান এবং সাবমেরিনের পরীক্ষা হয়েছে। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ পুতিনকে টেলিভিশন মন্তব্যে বলেছেন, “এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হল আমাদের কৌশলগত আক্রমণাত্মক বাহিনীর কর্মক্ষমতা নিখুঁত করা, যার লক্ষ্য শত্রুর বিরুদ্ধে একটি গ্যারান্টিযুক্ত স্ট্রাইক প্রদান করা।”
জেরাসিমভ জানিয়েছেন যে এই সামরিক মহড়া দুটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালাতে সক্ষম এরকম অস্ত্রের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করা। জেনেরাল বলেছেন, “দ্বিতীয় ধাপে জবাবি হামলার জন্য ব্যবহৃত কৌশলগত অস্ত্রের পরীক্ষা।” ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই মহড়ায় রাশিয়ার ব্ল্যাক অ্যান্ড নর্থ নৌবাহিনীর পাশাপাশি দেশের কৌশলগত বাহিনীও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ইউক্রেন সীমান্তে এই মুহূর্তে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। যেকোনও মুহূর্তে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করতে পারে বলে সম্ভাবনা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে রাশিয়া যেকোনও মুহুর্তে হামলা করতে পারে। বাইডেন আরও জানিয়েছেন, বিশ্বে যদি আরেকটা যুদ্ধ বাধে তার জন্য দায়ী থাকবে একমাত্র রাশিয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোয়াইট হাউসের আধিকারিক বলেন, “রাশিয়া যে বিপুল পরিমাণ সেনা মোতায়েন করেছে, তারমধ্যে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই হামলা চালানোর অপেক্ষায় বসে রয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা কৌশলগত সামরিক আকার নিয়েছে। এই সামরিক অবস্থানগুলি ছিক সীমান্তের কাছেই, যেখানে আগে থেকেই রাশিয়ার মিলিটারি বাহিনী হামলা চালানোর অপেক্ষায় বসে রয়েছে।”