
নয়াদিল্লি: হিরোশিমার বিস্ফোরণ, এখনকার প্রজন্ম এই ঘটনা শুধু পড়েছেন, জেনেছেন। কিন্তু যাঁরা এই ভয়াবহতার জীবিত প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, তাঁরা বলেন, পৃথিবী এর চেয়ে বেশি নৃশংসতার সাক্ষী থাকতে পারে না। কিন্তু সেই ঘটনার যদি পুনরাবৃত্তি হয়? পৃথিবীতে নয়, মহাকাশে! মানবজাতি কি সাক্ষী থাকতে পারবে? নাকি গোটা বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে।
১৯৯৮ সালে Armageddon নামে একটা হলিউডি ছবি রিলিজ হয়েছিল। তখনও ধর্মতলায় মেট্রো, নিউ এম্পায়ার, গ্লোব, লাইটহাউসের মতো ইংরেজি ছবি দেখার পরিচিত জায়গাগুলো টিকে আছে। ছবিটা খুবই জনপ্রিয় হওয়ায় দেখার হিড়িক লেগেছিল বেশ। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয়ে ছিলেন ব্রুস উইলিস। পৃথিবীর দিকে একটা মস্ত বড় গ্রহাণু ছুটে আসছে। মহাকাশেই পরমাণু বোমা দিয়ে সেটাকে ধ্বংস করার গল্প দেখানো হয়েছিল, এই Armageddon-এ।
বাস্তবের হিরোশিমার পুনরাবৃত্তি এবং পর্দার Armageddon বাস্তবে ফুটে ওঠা। এই দুই সম্ভব। তাও আবার কয়েক বছরের মধ্যে। ২০৩২ সালে এমনটা ঘটতে চলেছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর কক্ষপথের দিকে ধেয়ে আসছে 2024 YR4 নামে একটা গ্রহাণু। গতবছর টেলিস্কোপে সেটাকে প্রথম দেখা যায়। এখন সেটা আরও অনেকটা এগিয়ে এসেছে। গতিপথ সামান্য বদলেছে। তাতে বিজ্ঞানীরা বলছেন যে এই গ্রহাণু শেষ পর্যন্ত যদি পৃথিবীতে এসে আছড়ে নাও পড়ে তাহলেও ২০৩২ সালের ২২শে ডিসেম্বর চাঁদে এসে আছড়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা।
যদি তেমন কিছু হয় তা হলে হিরোশিমার চেয়েও অন্তত ৪০০ গুণ বড় বিস্ফোরণ হবে। চাঁদের টুকরো ছিটকে বেরিয়ে এসে মহাকাশে আমাদের কৃত্রিম উপগ্রহগুলোর বারোটা বাজিয়ে দেবে। আর পৃথিবীতে এসে পড়লে তো হয়েই গেল। তাই, নাসার বিজ্ঞানীরা এই গ্রহাণুকে মহাকাশেই ধ্বংস করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। ঠিক ওই Armageddon ছবির মতো। গ্রহাণুর আয়তন এখনও স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সামনের বছর ও আরেকটু এগিয়ে এলে তখন জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে ওকে ভাল করে দেখা যাবে। তারপরই, ধ্বংস করার ফাইনাল প্ল্যান তৈরি হবে।
নাসার দাবি, চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ার অন্তত তিন মাসে আগে গ্রহাণুকে ধ্বংস করতে হবে। না হলে পৃথিবীতে সেই বিস্ফোরণের আঁচ এসে পড়তে পারে। তবে মহাকাশে অতদূরে হিসেব কষে পরমাণু অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টাও বেশ জটিল।