
ঢাকা: জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হবে একই সঙ্গে। জাতির উদ্দেশে ভাষণে স্পষ্ট করলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। প্রথম থেকেই গণভোটের দিনক্ষণের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের উপরে ছেড়ে দিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। কিন্তু বাংলাদেশের জামায়েত ইসলামি-র নেতাদের দাবি ছিল, জাতীয় নির্বাচনের আগে হতে হবে সেই গণভোট। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দলের দাবি ছিল, কোনও অবস্থাতেই জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে গণভোট করা যাবে না।
এই আবহে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। তুলে ধরলেন সেই গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ। বললেন, ‘একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হবে।’ কিন্তু এই দুইয়ের পার্থক্যটা কী? জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের শাসক নির্ধারণ করবে। অন্যদিকে, গণভোট নির্ধারণ করবে নীতি। সংবিধান হবে সংস্কার।
বলে রাখা প্রয়োজন, এই বার্তার পূর্বে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। তারপরই নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হওয়ার কথা ঘোষণা করলেন ইউনূস।
প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দু’টি বিকল্প সুপারিশ জমা দিয়েছিল ঐক্যমত কমিশন। প্রথমটিতে বলা হয়েছিল, সনদের সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কারের প্রস্তাবগুলি বাস্তবায়নের বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাশ হলে আগামী জাতীয় সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসাবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের কাজ করবে। কিন্তু পরিষদ তা বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে করতে ব্যর্থ হলে সংস্কার প্রস্তাবগুলি স্বয়ংক্রিয় ভাবেই সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাবে। দ্বিতীয় সুপারিশটিতে বলা হয়েছিল, ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে। না হলে কী হবে, তা সেখানে উল্লেখ ছিল না।
উল্লেখ্য, এই জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্য়ে বিবাদ কম নয়। সে কথা জানে ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারও। সেই কারণেই রাজনৈতিক দলগুলিকে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে বলেছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি, সরকারকেও দিকনির্দেশ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু সবটাই থেকে গিয়েছে মৌখিক। না মিলেছে সমাধান সূত্র, না মিলেছে দিকনির্দেশনা।