
ঢাকা: বাংলাদেশের সংবিধানে ফের সংশোধনের পথ প্রশস্ত করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। এবার বদল আনা হতে পারে প্রধানমন্ত্রিত্বের সর্বোচ্চ মেয়াদ নিয়েও। সোমবার সেই প্রসঙ্গেই আবার বৈঠকে বসেছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কিন্তু সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে তৈরি হল মতবিরোধ।
রবিবার শুরু হওয়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের যোগ দিয়েছিল বাংলাদেশের মোট ৩০টি রাজনৈতিক দল। সেখানেই আলোচনা চলছিল প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি পদের নির্দিষ্ট মেয়াদ বেঁধে দেওয়া নিয়ে। মূলত একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কতবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন, তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতেই উদ্যোগী হয়েছে ইউনূসের প্রশাসন।
হাসিনার সময়কালে তিনি নিজেই টানা ১৫ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন। তাই এক ব্যক্তিতন্ত্র দূর করতে, এবার সর্বোচ্চ দু’বার পর্যন্ত অর্থাৎ ১০ বছরেই প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ বেঁধে দেওয়ার জন্য প্রস্তাব আনল অন্তর্বর্তী সরকার। যা ঘিরে বৈঠকের মধ্যেই তৈরি হল মতবিরোধ। বেশ কয়েকটি দল ইউনূসের প্রস্তাব সায় দিলেও বিরোধ প্রদর্শন করল বিএনপি, এনডিএম-র মতো দলগুলির। এই প্রস্তাবে সায় দিল না বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিও।
রবিবারে কোনও প্রস্তাব নিয়ে একমত হতে না পারায়। সোমবার সকাল থেকে পুনরায় শুরু হয় বৈঠক। কিন্তু তাতেও আসে না সমাধান সূত্র। বৈঠক চলাকালীন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এভাবে ঐকমত্যে আসা সম্ভব হবে না। এর বদলে একজন সর্বোচ্চ কত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, তা এখনও ভেবে দেখার বিষয়। আমাদের প্রশ্ন কোনও রাজনৈতিক দল যদি পর পর তিন বার জাতীয় সংসদের নির্বাচনে জয়ী হয়, তা হলে কেন তারা নিজেদের পছন্দের নেতা বা নেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসাতে পারবেন না?’
অন্যদিকে বিএনপিকে কার্যত অগ্রাহ্য করে সদ্য তৈরি হওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ‘তিনটি দল ছাড়া বাকিরা প্রায় প্রত্যেকেই সহমত জানিয়েছে। এই বিষয়ে লিখিতি ঐক্যমতের দিকে যাওয়া যায় কিনা, তাও বিবেচনা করা প্রয়োজন।’ সবশেষে, মতবিরোধ থাকার কারণে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলত আপাতত মুলতুবি হয় আলোচনা।