
ঢাকা: বাজেয়াপ্ত করা হবে সমস্ত সম্পত্তি। সোমবার রায়দানের পর এমনই নির্দেশ দিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল আদালত। এদিন এই আদালতের দিকেই তাকিয়ে ছিল গোটা বাংলাদেশ। তাকিয়ে ছিল বিশ্বও। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সেখানে চলছিল রায়দান পর্ব। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন মোট তিন বিচারপতি বেঞ্চেই চলেছে শুনানি। অবশেষে রায়দান।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের ধারায় অভিযোগ দায়ের হয় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশকর্তা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে। এঁদের মধ্যে প্রথম দুই অভিযুক্ত হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। চৌধুরী আবদুল্লাহ হয়েছেন রাজসাক্ষী। ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর শুরু হয় মামলার শুনানি। যার নিষ্পত্তি ঘটল ১ বছর এক মাস পর। রায়দান করল ট্রাইবুন্য়াল।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দু’টি মামলায় ফাঁসির সাজা দিয়েছেন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। পাশাপাশি, আরও একটি মামলায় দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। অন্যদিকে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকেও ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আদালত। তবে এঁনারা দু’জনেই পলাতক। এঁনাদের বিপক্ষে রাজসাক্ষী হওয়া প্রাক্তন পুলিশকর্তা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এখন বাংলাদেশে। এদিন বিচারপতি বলেন, ‘প্রাক্তন পুলিশকর্তাও একই দোষে দুষ্ট। কিন্তু তিনি যেহেতু এই তদন্তের কাজে সহযোগিতা করেছেন, তাই তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনাচ্ছে আদালত।’
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামীর নামে দেশে থাকা সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল। অর্থাৎ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামানের সমস্ত সম্পত্তি এবার বাজেয়াপ্ত করবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু কত সম্পত্তি রয়েছে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর? শেষ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, হাসিনার মোট সম্পত্তির পরিমাণ চার কোটি ৩৬ লক্ষ (বাংলাদেশি মুদ্রায়)। ভারতীয় মুদ্রায় যার হিসাব তিন কোটি ১৪ লক্ষ টাকা। অবশ্য, ইউনূসের শীর্ষকর্তাদের মতে, হাসিনার অলিখিত সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খানের সম্পত্তির লিখিত খতিয়ান পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি একটি আর্থিক তছরুপের মামলার তদন্তে নেমে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ৬০ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকার অবৈধ সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছিল বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক।