ঢাকা: শহরের অভিজাত এলাকা। সেখানে মূলত বিত্তশালীদেরই বাস। সরকারের নিয়ম মতো আবাসিক এলাকায় বেশ কিছু ব্যবসা করা যায় না। সেই নিয়ম মেনে চলা হচ্ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতেই হাজির হয়েছিল পুলিশ। আবাসনের প্রত্য়েকটি রুমে গিয়ে বেল বাজাচ্ছিল পুলিশ। বাকি ফ্ল্যাটগুলির বাসিন্দারা দরজা খুললেও, একটি ফ্ল্যাটেই কিছুতেই দরজা খোলা হচ্ছিল না। সন্দেহ তৈরি হয় তখনই। বারংবার বেল বাজাতেই হঠাৎ দরজা খুলে ছাদের দিকে ছুট লাগালেন দুই মহিলা। কিছু গোলমাল রয়েছে, এই সন্দেহে পিছন পিছনই ছোটেন পুলিশকর্মীরাও। কিন্তু তাদের আটকানোর আগেই হঠাৎ চারতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলেন দুই মহিলা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজধানী ঢাকায়। যে দুই মহিলা আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন, তাদের মধ্যে একজনের মৃত্য়ু হয়েছে, আরেকজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
ঢাকা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাসিক এলাকায় গোপনে স্পায়ের ব্যবসা চলছে, এমনটাই সূত্র মারফত খবর মিলেছিল। সেই খবর সত্যি কি না, তা খতিয়ে দেখতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল পুলিশ। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশনের একটি আবাসনে হানা দেয়। প্রত্যেকটি ফ্ল্যাটে গিয়ে তল্লাশি চালানোর সময়ই হঠাৎ একটি ফ্ল্যাটের ভিতরে থাকা লোকজনেরা দরজা খুলতে অস্বীকার করেন। পুলিশ দরজা ভাঙার উপক্রম করতেই হঠাৎ দুইজন মহিলা দরজা খোলেন, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীদের ধাক্কা মেরে তাঁরা ছাদের দিকে দৌড় মারেন। পিছন পিছন পুলিশ দৌঁড়লেও, তাঁদের ধরার আগেই ছাদ থেকে ঝাপ দেন ওই দুই মহিলা।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুলশানের ওই অভিজাত আবাসনের ভিতরেই স্পা সেন্টার চালানো হত। সেখানে চুল কাটা থেকে শুরু করে বডি ম্যাসাজ, সমস্ত পরিষেবাই পাওয়া যেত। কিন্ত আসল ব্যবসা ছিল অন্য কিছু। পুরুষ গ্রাহকরা একবার ঢুকলে, অনেকক্ষণ সময় কাটিয়েই বেড়তেন। জানা গিয়েছে, আসলে স্পায়ের আড়ালে সেখানে মধুচক্র চলত। পুলিশকে দেখেই ভয় পেয়ে যান ওই দুই মহিলা। গ্রেফতারি ও লোকলজ্জার ভয়ে তাঁরা চারতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন।
ওই স্পায়ের মালিক, তাঁর স্ত্রী ও ফ্ল্যাটের মালিকের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই পলাতক। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, স্পায়ের মালিক ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আগেও একাধিকবার মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তাদের গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যান।