
চট্টগ্রাম : কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা কীভাবে আরও নিবিড় করা যায়, সেই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল তাঁদের মধ্যে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম, ভারতকে ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। বিশেষ করে ত্রিপুরা, অসমের মতো ভারতের উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলি, যেগুলির চারিদিকে স্থলভূমি, সেই রাজ্যগুলির সুবিধার কথা মাথায় রেখেই এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এর পাশাপাশি, দুই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে এতে, এমনই মনে করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিশেষত্ব কী? বিশ্বের সবথেকে প্রাচীন সমুদ্র বন্দরগুলি মধ্যে একটি হল চট্টগ্রামের বন্দর। অতীতে খ্রিষ্টপূর্ব চারের শতকে চট্টগ্রাম বন্দরের নাম ছিল শ্বেতগাঙ। চীন ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে এখানে জাহাজ আসত। কিন্তু চট্টগ্রাম শহরটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় ফেলে রেখেছিল বাংলাদেশ সরকার। তবে একবিংশ শতকে এই চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক সুবিধাগত অবস্থানের দিকটি প্রথম নজরে আসে বিনিয়োগকারীদের। আর তার পর থেকেই নতুন করে ইতিহাস গড়তে শুরু করে চট্টগ্রাম। ভারতীয় মুদ্রার হিসেবে প্রায় ৬১ হাজার ২০৭ কোটি টাকারও বেশি অঙ্কের বাণিজ্য হয়। বাংলাদেশে সমস্ত আমদানি ও রফতানি এখন এই চট্টগ্রাম বন্দর থেকেই হয়।
বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামটি গড়ে উঠেছে কর্ণফুলি নদীর তীরে। বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশই হয় এই বন্দর দিয়ে। লয়েডের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বিশ্বের ব্যস্ততম পণ্যবাহী বন্দরের মধ্যে ৫৮ তম স্থানে ছিল এই বন্দরটি। বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। চট্টগ্রাম পোর্ট অথরিটি চালানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার পাঁচ সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করে দিয়েছে। বন্দরে ১৫ টি পৃথক বিভাগ রয়েছে এবং প্রায় ৬ হাজারেরও বেশি কর্মী এখানে কাজ করেন।খাদ্য শস্য, চিনি, নুন, সিমেন্ট, সার, লোহা, রাসায়নিক, কয়লা, ভোজ্য তেল এবং আরও অন্যান্য পণ্য এই বন্দর থেকেই আমদানি হয় বাংলাদেশে। রফতানি হওয়া পণ্যের তালিকায় রয়েছে পাট ও পাটজাত দ্রব্য, জামাকাপড়, চা সগহ আরও অনেক কিছু। চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ২০ টি বার্থ রয়েছে জাহাজের জন্য।