Bangladesh: বাড়িতে পড়ে মায়ের দেহ, কান্না চেপে পরীক্ষার হলে ছুটল দুই বোন

Bangladesh Cox's Bazar: স্কুল পেরিয়ে কলেজে ওঠার পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনেই মায়ের মৃত্যু। দেহ বাড়িতে রেখে মায়ের স্বপ্ন পূরণে পরীক্ষা হলে গেলেন দুই বোন।

Bangladesh: বাড়িতে পড়ে মায়ের দেহ, কান্না চেপে পরীক্ষার হলে ছুটল দুই বোন
টেকনাফের সরকারি এজাহার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে দুই বোন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 02, 2023 | 7:19 PM

ঢাকা: মায়ের স্বপ্ন ছিল, দুই মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা পাস করে কলেজে উঠবে। কলেজ পেরিয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর নিজেদের ক্ষমতায় জীবন গড়ে নেবে। সেই স্বপ্ন সফল হওয়া আর দেখা হবে না মায়ের। কারণ, মেয়েদের স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজের ওঠার মতো বড় পরীক্ষা চলাকলীনই না ফেরার দেশে পারি দিয়েছেন বছর পঞ্চাশের আনোয়ারা বেগম। সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা শুরুর কিছু আগেই তাঁর মৃত্যু সংবাদ আসে। তবে, মা হারানোর শোকের বদলে মায়ের স্বপ্নপূরণকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে দুই বোন সাদিয়া ফেরদৌস ও শারমিন ইয়াসমিন। মঙ্গলবার (২ মে) চোখের জল নিয়েই তাঁরা গিয়েছিলেন পরীক্ষার হলে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলায়।

জানা গিয়েছে বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন আনোয়ারা বেগম। সোমবার রাতে হঠাৎ তাঁর অসুস্থতা বেড়ে যায়। কক্সবাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অবস্থার আরও অবনতি হলে, মঙ্গলবার ভোরে উন্নততর চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, পথেই মৃত্যু হয় আনোয়ারার। এদিকে, এদিনই স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল। এই অবস্থায় মা আনোয়ারা বেগমের দেহ বাড়িতে রেখেই এসএসসি পরীক্ষা দিতে যান সাদিয়া ও শারমিন। পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি ফিরে মায়ের শেষকৃত্যে অংশ নেন তাঁরা।

দুই বোনের পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে টেকনাফের সরকারি এজাহার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ, চোখ মুছতে মুছতে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হন দুই বোন। সহপাঠী ও ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন তাঁদের। পরীক্ষা শুরুর আগে সাদিয়া ও শারমিন জানান, মা তাদের খুব ভালোবাসতেন। তিনি চাইতেন তাঁরা যেন লেখাপড়া করে সমাজে প্রতিষ্ঠা পান। ভালো ভাবে জীবন গড়েন। তাই এই শোকের আবহেও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন তারা। মায়ের আত্মাকে তাঁরা কষ্ট দিতে চান না। তাঁদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, সদ্য মা হারা দুই বোনই অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। তাঁরা এইদিন দুটি আলাদা কক্ষে বসে পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষার হলে লিখতে লিখতেই তাঁরা একাধিকবার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। টেকনাফ উপজেলার সর্বোচ্চ সরকারি আধিকারিক বলেছেন, “মাকে হারানো সবার জন্যই অত্যন্ত কষ্টদায়ক। তারপরও এসএসসি পরীক্ষার্থী সাদিয়া ও শারমিন পরীক্ষায় দিচ্ছেন। পরীক্ষার সময় দুই বোনের পাশে যতটা সম্ভব থাকবে প্রশাসন।”