Bangladesh: হাত-পা বাঁধা ভেসে আসা ১০ দেহ কি জলদস্যুদের? ক্রমেই ঘনাচ্ছে রহস্য

Bangladesh Cox's Bazar boat: গত রবিবার বাংলাদেশের কক্সবাজারে গভীর সমুদ্রে ডুবে যাওয়া একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে মরদেহগুলি শনাক্ত করা গিয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, সমুদ্রে ডাকাতি করতে গিয়ে মৎস্যদীবীদের হাতে খুন হয়েছে তারা।

Bangladesh: হাত-পা বাঁধা ভেসে আসা ১০ দেহ কি জলদস্যুদের? ক্রমেই ঘনাচ্ছে রহস্য
দেহ ভরা ট্রলার ঘিরে বাড়ছে রহস্য
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 25, 2023 | 8:23 PM

ঢাকা: গত রবিবার বাংলাদেশের কক্সবাজারে গভীর সমুদ্রে ডুবে যাওয়া একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে মরদেহগুলি শনাক্ত করা গিয়েছে। ৬ জনের দেহ ইতিমধ্যেই তাদের স্বজনদের হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহগুলি পচে-গলে গেলেও, তাদের পোশাক এবং অবয়ব দেখে শনাক্ত করেছেন আত্মীয়রা। প্রত্যেকেই কক্সবাজারের মহেশখালী এলাকার বাসিন্দা। গত কয়েকদিন ধরে তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন। জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজনই কিশোর। তবে, গভীর সমুদ্রে তাঁদের মাছ ধরার ট্রলারে ঠিক কী ঘটেছিল, সেই রহস্যের সমাধান এখনও হয়নি। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল মৎস্যজীবীরা। তবে, স্থানীয় স্তরে অন্য এক কাহিনিও শোনা যাচ্ছে। আদৌ নিহতরা জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল, না কি তারা নিজেরাই জলদস্যু – তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার দাবি, রমজান মাসের মাঝামাঝি, ১৮ জনের একটি দল একটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল। তবে মাছ ধরতে নয়, নুরুল কবির নামে ২০ বছরের এক জলদস্যুর নেতৃত্বে তারা সমুদ্রে লুঠপাট চালাতে গিয়েছিল বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের আরও দাবি, গভীর সমুদ্রে ডাকাতির এক পর্যায়ে ৫-৬টি মাছ ধরার ট্রলার ডাকাতদের ট্রলারটিকে চারদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছিল। ডাকাতদের মেরে তাদেরই ট্রলারের কোল্ড স্টোরে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে, ট্রলারটিকে তাঁরা সমুদ্রে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। উদ্ধার হওয়া ১০ অর্ধগলিত মরদেহ ওই ডাকাতদের বলেই দাবি করছেন তাঁরা। তাঁদের যুক্তি, শনাক্ত হওয়া মরদেগুলি যাদের, তাদের অনেকেরই মাছ ধরার অনুমতি নেই। মৃতদের মধ্যে কিশোরদের দেহও রয়েছে। বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী, কিশোরদের সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া অবৈধ। এমনকি যে ট্রলারটিতে মরদেহগুলি পাওয়া গিয়েছে সেটিরও কোনও লাইসেন্স নেই। সব মিলিয়ে দেহগুলি জলদস্যুদের বলেই মনে করছেন তাঁরা।

নিহতরাই জলদস্যু, দাবি স্থানীয়দের

তবে, স্থানীয়দের স্তরে একটি ভিন্ন মতও রয়েছে। এই মতাবলম্বীদের দাবি, নিহতরাও মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। মাঝ সমুদ্রে তাঁরা ডাকাতদের কবলে পড়েন। ডাকাতদের হাতেই তাঁরা নিহত হয়েছেন। ডাকাতদলই তাঁদের মেরে নৌকোটি সমুদ্রে ডুবিয়ে দিয়েছিল। পরে, ট্রলারটি আরেকটি মাছ ধরার ট্রলারের জালে আটকা পড়ে। ওই ট্রলারের জেলেরা দড়ি দিয়ে ডুবন্ত ট্রলারটি টেনে মহেশখালীর সোনাদিয়ায় নিয়ে আসেন। রবিবার ডুবন্ত ট্রলারটিকে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক চ্যানেলে নিয়ে আসা হয়।

কোনও ধারণাই উড়িয়ে দিচ্ছে না বাংলাদেশি পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ও বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ যৌথভাবে এই ঘটনার তদন্ত করছে। উচ্চ পদস্ত এক পুলিশ কর্তা বলেছেন, “এখন পর্যন্ত সুনিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না কীভাবে হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটেছে বা কারা এটা ঘটিয়েছে। তদন্তকারীরা কাজ করছেন। ঢাকা থেকে সিআইডি, পিবিআইয়ের দল এসে অনুসন্ধান শুরু করছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের দ্রুত চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।” এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, সমুদ্রে জেলেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পুলিশ নিয়মিত নজরদারি শুরু করেছে। সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের জন্য জিপিআরএস পদ্ধতি চালু করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।