Bangladesh: নেশা যখন বই, ১৬টি পাঠাগার স্থাপন করেছেন এই রাজমিস্ত্রি

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Nov 16, 2022 | 9:16 PM

Bangladeshi mason establishes 16 libraries: কখনও তিনি রঙের কাজ করেন, কখনও রাজমিস্ত্রির সহকারি। তারপরও, পড়াশোনা চালানোর পুরো খরচ ওঠে না। এই অভাব অভিযোগের মধ্য়েই নিজের উদ্যোগে ১৬টি পাঠাগার স্থাপন করেছেন এই বাংলাদেশি রাজমিস্ত্রি।

Bangladesh: নেশা যখন বই, ১৬টি পাঠাগার স্থাপন করেছেন এই রাজমিস্ত্রি
২০১৮ সালে নিজের বাড়ির বারান্দাতেই প্রথম পাঠাগারটি স্থাপন করেছিলেন মহম্মদ আসাদুজ্জামান

Follow Us

ঢাকা: কখনও তিনি রঙের কাজ করেন, কখনও রাজমিস্ত্রির সহকারি। তারপরও, পড়াশোনা চালানোর পুরো খরচ ওঠে না। অভাবের সংসারে বাড়ি থেকেও কিছু টাকা নিতে হয়। তবে, এই অভাব অভিযোগের মধ্য়েও নেশা তাঁর বই। শুধু নিজে পড়া নয়, উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় থেকেই, আশপাশের মানুষদেরও বই পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা শুরু করেছিলেন তিনি। বই পাগল মহম্মদ আসাদুজ্জামান নিজের উদ্যোগেই গড়ে তুলেছেন ১৬টি পাঠাগার। সম্প্রতি এই মহান উদ্য়োগের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে ‘জয় বাংলা যুব পুরস্কার’ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের জামালপুরের সরিষাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আসাদুজ্জামান। এক সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তিনি। ২০১৮ সালে উচ্চমাধ্যমিকের পড়াশোনা করার সময়ই নিজের বাড়ির বারান্দায় তিনি তাঁর প্রথম পাঠাগারটি স্থাপন করেছিলেন। বাড়িতে পড়ে থাকা কিছু কাঠের তক্তা দিয়ে বাড়ির বারান্দাতেই তিনি বানিয়েছিলেন বই রাখার শেল্ফ। জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ওই বছরই খুন হয়েছিলেন তাঁর দাদা রবিউল ইসলাম মিলন। দাদার নামেই বাড়িতে তিনি শুরু করেছিলেন মিলন পাঠাগার। পাড়ার এক দিদির দেওয়া ২০টি বই দিয়ে শুরু হয়েছিল মিলন পাঠাগারের পথ চলা।

তারপর থেকে ওই এলাকায় আরও ১৬টি পাঠাগার গড়ে তুলেছেন তিনি। রেলস্টেশনে, কিন্ডারগার্টেন স্কুলে, পথের পাশে, অন্যান্য লোকজনদের বাড়িতে পাঠাগার গড়ে তুলেছেন। এখন তাঁর পরিচালিত ১৬টি পাঠাগারে মোট ৮০০০ বই রয়েছে। দেশ-বিদেশের ব্যবসায়ী, সমাজকর্মী, সরকারি কর্তা, ক্রিকেটাররা আসাদুজ্জামানের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ আসাদকে শেল্ফ কিনে দিয়েছেন, কেউ কিনে দিয়েছেন সাইকেল, কেউ দিয়েছেন স্টিলের আলমারি।

কিন্তু, বইয়ের ভূত আসাদুজ্জামানের কাঁধে চাপল কী করে? বইয়ের প্রতি তাঁর আকর্ষণ তৈরি হয়েছিল প্রাথমিক স্কুলে পড়ার সময়ই। প্রতি বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে গল্পের বই দেওয়া হত। স্কুলে থাকাকালীন বইগুলো পড়ে শেষ করা যেত না। আসাদের মনে হত, যদি বইগুলো বাড়ি এনে পড়া যেত। এরপর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল। প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলে কোনও পাঠাগার না থাকলেও, হেডস্যারের ঘরে একটা তালাবন্ধ শেলফ ছিল। সেখানে অনেক গল্প–উপন্যাসের বই ছিল। কিন্তু কাউকে পড়তে দেওয়া হত না। সেই শেল্ফ থেকে বই চুরি করেছিলেন আসাদুজ্জামান। এই ভাবেই বইয়ের প্রতি তাঁর ভালবাসা জন্মেছিল।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে আসাদুজ্জামানকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “অনেকেই বলেন এখনকার ছেলেমেয়েরা বই পড়ে না। কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়। আসলে হাতের কাছে সুযোগ না থাকায় তারা বই পড়ে না। আমাদের এলাকায় মাদকের নেশার মতো বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কমে গিয়েছে। যেসব ছেলেমেয়েরা বই পড়ে সময় কাটায়, তারা এই সব অপরাধ থেকে দূরে থাকে।”

Next Article