ঢাকা: পুজো মণ্ডপে (Durga Puja) ভাঙচুর, হামলার ঘটনা ঘিরে উত্তাপের পারদ চড়ছে বাংলাদেশের ((Hindu Temple in Bangladesh)) বিভিন্ন জেলায়। ইতিমধ্যেই এই হিংসায় তিনজনের মৃত্যুরও খবর পাওয়া গিয়েছে। পরিস্থিতি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ না করলে এই ঝামেলার আঁচ যে বহুদূর ছড়াতে পারে সেই আশঙ্কা থেকেই এবার কড়া সিদ্ধান্ত নিল শেখ হাসিনার সরকার। সে দেশের ২২ জেলায় আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
বুধবার থেকেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম বিডি নিউজ ২৪ ডট কমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কুমিল্লার একটি মন্দিরে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়ায় কুমিল্লার এই মণ্ডপে সংখ্যাগুরুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। যার জেরে চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালি, কক্সবাজারের পেকুয়ায় পুজো মণ্ডপে ভাঙচুর চলে বলে অভিযোগ ওঠে।
বিডি নিউজ ২৪ ডট কমের খবর অনুযায়ী, এখনও অবধি এই ঘটনায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন একটি পুজো মণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে জানান, “উসকানি দিয়ে ষড়যন্ত্র করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। নানুয়ার দিঘিরপাড়ের যে ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে সেখানে তার প্রমাণও মিলেছে। ওই ভিডিয়ো যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন তাঁকেও ধরা হয়েছে। এখনও অবধি এই গোলমালের ঘটনায় ৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
বাংলাদেশের দ্য ডেইলি স্টার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বুধবার কুমিল্লার ঘটনার খবর আসতেই পুলিশের সঙ্গে জনতার কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ উপজেলায়। তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন আরও বহু। এরপরই বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে একটি নির্দেশনামা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, দুর্গাপুজো যাতে নির্বিঘ্নে ও কড়া নিরাপত্তায় হতে পারে তার জন্য দেশের মোট ২২টি জেলায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী থাকবে। একই সঙ্গে কাজ করবেন বিজিবির সদস্যরাও।
ধর্মীয় বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রকের তরফে এমার্জেন্সি নোটিস জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও ভাবেই কেউ যেন আইন হাতে তুলে না নেন। সকলে যেন সম্প্রীতি ও ধর্মীয় সংহতি বজায় রাখেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবির (BGB) শীর্ষ কর্তা ফইজুর রহমান বলেন, “বিজিবির জওয়ানরা সবসময় সজাগ থাকবেন। পূর্ণ নিরাপত্তায় যাতে দুর্গাপুজো হয় তা নজরে রাখবেন তাঁরা। এ সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়েছেন ডেপুটি কমিশনার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে।”
All Hindus in Comilla are being instructed to be alert . Stay in the temple together. We are appealing to the Bangladesh Police for help in nanua dhighir par area .
— Bangladesh Hindu Unity Council (@UnityCouncilBD) October 13, 2021
বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাসান মেহমুদ বলেন, এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে একদল এই ধরনের কালি ছেটানোর চেষ্টা করছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে যারা দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে, তারা কোনওদিনই সফল হবে না।