ঢাকা: ইউক্রেনে রাশিয়ার হানা (Russia-Ukraine Conflict) ইতিমধ্যেই দু’সপ্তাহ অতিক্রম করছে, তবে এখনও যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। আটকে থাকা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে বের করে আনার জন্য মাঝে মাঝেই সাময়িক যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করেই ক্ষান্ত থেকেছে রাশিয়া। তবে ইউরোপের ছোট দেশে রাশিয়ান আগ্রাসন বিন্দুমাত্র কম হয়নি। ইউক্রেনে রুশ হানার পর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে (United Nations General Assembly) রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবে অনেক দেশই ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের বিপক্ষে ভোট দিলেও চিন, ভারতের মত শক্তিশালী দেশগুলি ভোটদানে বিরত ছিল। সাধারণ সভায় সদস্য মোট ১৯৩ টি দেশের মধ্যে ১৪১ টি দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। খোদ রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া এবং এরিট্রিয়া প্রস্তাবে বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জে হওয়া ভোটে ভারতের প্রতিবেশি বাংলাদেশও (Bangladesh) রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট না দেওয়া এবং পুতিনের আগ্রাসী নীতির বিরোধিতা না করায় বড় মূল্য চোকাতে হল বাংলাদেশকে। সব মিলিয়ে মোট ৩৫ টি দেশ ভোট দানে বিরত ছিল। বাংলাদেশর তাদের অন্যতম।
রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকায় এবার বড়সড় মাশুল দিতে হবে বাংলাদেশকে। আগেই বাংলাদেশকে করোনা টিকার ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ডোজ় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল লিথুয়ানিয়া। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জে বাংলাদেশের ভূমিকা দেখার পর লিথুয়ানিয়া নিজেদের নেওয়া সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। লিথুয়ানিয়ান ন্যাশানাল রেডিও টেলিভিশন এমনটাই জানিয়েছে। জানা গিয়েছে বাংলাদেশকে ফাইজ়ারের করোনা টিকার ডোজ় পাঠানোর কথা ছিল লিথুয়ানিয়ার। তবে এখন ইউরোপের এই দেশ নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় করোনা মোকাবিলা সমস্যার মুখে পড়ে গেল বাংলাদেশ, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা প্রথম থেকেই বলছিলেন, করোনা সংক্রমণ রুখতে ও করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে করোনা টিকা সবথেকে বেশি প্রয়োজনীয়। রাশিয়ার বিরোধিতা না করায় বাংলাদেশের মানুষ বিপুল সংখ্যক করোনা টিকা থেকে বঞ্চিত হবেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ জানিয়ে এসেছিল, তার সবসময়ই শান্তির পক্ষে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছিল, আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তবে বাংলাদেশ জানিয়েছিল তারা ইউক্রেনের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত থাকার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ জানিয়েছিল, রাষ্ট্রপুঞ্জে গৃহীত প্রস্তাবে ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের নিন্দার কথা বলা থাকলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কোনও কিছুই ছিলনা। লিথুয়ানিয়ার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে সরব হয়েছেন।