Hasina’s Awami League: মুখ পুড়ল বাংলাদেশের নয়া শাসকদের, নিষিদ্ধ হল না আওয়ামি লিগ
Hasina's Awami League: সোমবারই (২৮ অক্টোবর), বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামি লিগ-সহ ১১টি রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধের আবেদন করে মামলা করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও হাসিবুল ইসলাম। তবে, একদিনের মধ্যেই সেই মামলা আর না চালানোর ঘোষণা করলেন সারজিস ও হাসনাত।
ঢাকা: ছাত্রলিগকে নিষিদ্ধ করা হলেও, আওয়ামি লিগকে শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করার রাস্তা থেকে সরে এল বাংলাদেশের বর্তমান শাসকরা। সোমবারই (২৮ অক্টোবর), বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামি লিগ-সহ ১১টি রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধের আবেদন করে মামলা করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও হাসিবুল ইসলাম। তবে, একদিনের মধ্যেই সেই মামলা আর না চালানোর ঘোষণা করলেন সারজিস ও হাসনাত। একই সঙ্গে, আওয়ামি লিগের আমলে হওয়া বাংলাদেশের তিনটি নির্বাচনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে যে মামলা করা হয়েছিল, সেটিও আর না চালানো হবে না বলে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুই বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে, রিট দুটি না চালানোর কথা জানান আবেদনকারীদের আইনজীবী আহসানুল করিম। পরে আবেদন দুটি উত্থাপিত হয়নি দেখে দুটি মামলাই খারিজ করে দেন বাংলাদেশ হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চটি।
দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর, গতকাল হাইকোর্টে এই দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বাংলাদেশ আওয়ামি লিগ ছাড়াও, জাতীয় পার্টি, জাসদ, জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এম-এল) (দিলীপ বড়ুয়া), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) – এই ১১টি দল যাতে কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড না চালাতে পারে, সেই বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ চাওয়া হয়। অপর আবেদনে বাংলাদেশের দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বেআইনি ঘোষণার বিষয়ে আদেশ চাওয়া হয়েছিল। এই তিন নির্বাচনের গেজেট বাতিল করার আবেদনও করা হয়েছিল।
এদিন, আদালতে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর আইনজীবী, আহসানুল করিম জানান দুটি মামলার কোনোটিই তাঁরা আর চালাতে চাননা। পরে হাইকোর্টের কার্যতালিকা থেকে মামলাদুটিকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু, ঠিক কেন আবেদনদুটি প্রত্যাহার করা হল, তা জানাননি আইনজীবী আহসানুল করিম। তিনি জানান, আবেদনকারীরাই এর কারণ জানাতে পারবেন। এর আগে অবশ্য, আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলিগকে নিষিদ্ধ করা হয়। তার জন্য অবশ্য আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক নির্দেশেই তা করা হয়েছিল। এই ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে। ইচ্ছামতো আওয়ামি লিগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা যাবে না।
ছাত্র সংগঠন হলেও, আওয়ামি লিগ প্রতিষ্ঠার এক বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ছাত্রলিগ। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পরের বছরই, ৪ জানুয়ারি ছাত্রলিগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাভাষার উপর আক্রমণ-সহ তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠির বিভিন্ন দরনের অত্যাচার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে তৈরি হয়েছিল এই ছাত্র সংগঠন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সারে শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন ও ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম-সহ বাংলাদেশের প্রায় সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনই সংগঠিত করেছিল ছাত্রলিগই। সেই দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে।