Bangla News World Besides Koh i Noor diamond, what cultural artifacts did British Empire loot from other nations?
British Loot: চার শতক ধরে শুধুই লুঠতরাজ – কোহিনূরের পাশাপাশি, আর কী কী চুরি করেছে ব্রিটিশরা?
TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী
Sep 19, 2022 | 1:03 AM
Cultural artifacts British Empire looted: রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের মৃত্যুর পর ভারত থেকে কোহিনুর হীরা ফেরানোর দাবি উঠেছে। শুধু কোহিনুরই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য চুরি করেছিল ব্রিটিশরা।
1 / 10
রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের মৃত্যুর পর ভারত থেকে কোহিনুর হীরা ফেরানোর দাবি উঠেছে। তবে শুধু ভারত নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেই চুরি করা সব সামগ্রী ফেরত দেওয়ার দাবি উঠতে শুরু করেছে। ষোড়শ শতকের শেষ থেকে বিংশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত, বিশ্বের একটা বড় অংশ জুড়ে ছড়িয়েছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। আর এই বিশাল উপনিবেশের মানুষেদের কাছ থেকে বহু সম্পদ লুঠ করেছিল ব্রিটিশরা। ব্রিটিশ জাদুঘরে যে প্রায় ৮০ লক্ষেরও বেশি নিদর্শন রয়েছে, সেখানে এই চুরি করা সামগ্রীর সংখ্যাই বেশি। এখানে এমন ৯টি প্রখ্যাত ও দুর্মূল্য সাংস্কৃতিক নিদর্শনের কথা আলোচনা করা হল, যা ব্রিটিশ শাসকরা উপনিবেশ থেকে চুরি করেছিল।
2 / 10
বর্তমানে নাইজেরিয়ার অংশ বেনিন। একসময় তেরশো শতকের কয়েক হাজার ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য দিয়ে সজ্জিত ছিল বেনিন রাজপ্রাসাদ। কিন্তু ১৮৯৭ সালে বেনিন বিদ্রোহীদের শাস্তি দিতে সেনা অভিযান করেছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। ব্রিটিশ সেনা গোটা শহর জুড়ে লুটপাট চালিয়েছিল। সেই লুঠের মাল, ৯০০টিরও বেশি ব্রোঞ্জের তৈরি ঐতিহাসিক বস্তু এখন ব্রিটিশ জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। ১৯৬০ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে, নাইজেরিয়া বেশ কয়েকবার ওই ব্রোঞ্জ ফেরত চেয়েছে। ব্রিটিশ জাদুঘর সেগুলি কোনওদিনই পুরোপুরি ফেরত দিতে রাজি হয়নি।
3 / 10
১৮০১ থেকে ১৮০৫ সালের মধ্যে গ্রীসের পার্থেনন থেকে পার্থেনন মার্বেল বা এলগিন মার্বেল চুরি করেছিল ব্রিটিশরা। ওই মার্বেল পাথরের ভাষ্কর্যগুলিতে দেবী এথেনার জন্মদিন উদযাপন থেকে শুরু করে যুদ্ধ ইত্য়াদি ঐতিহাসিক ছবি ধরা আছে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত লর্ড এলগিন, পার্থেননের ধ্বংসাবশেষ থেকে এই ভাস্কর্যগুলি তুলে এনেছিল। সেই সময় থেকেই গ্রিস এই লুন্ঠনের বিরোধিতা করছে। তবে, ব্রিটিশ মিউজিয়াম মার্বেলগুলি ফেরত দিতে অস্বীকার করেছে। বরং, পার্থেনন থেকে ভাস্কর্যগুলি চুরি করাকে তারা "সৃজনশীল কাজ" বলে দাবি করে।
4 / 10
ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রাখা রোসেটা স্টোন, মিশর গবেষকদের প্রাচীন মিশরের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের পাঠোদ্ধার করতে এবং সেগুলি বোঝার সহায়ক। ১৯৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাজা পঞ্চম টলেমি মিশরের মেমফিসে একটি আদেশ জারি করেছিলেন। সেই আদেশের তিনটি সংস্করণ খোদাই করা রয়েছে এই পাথরে। এটি প্রথম মিশর থেকে লুঠ করেছিলেন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। ১৮১৫ সালে যুদ্ধে ফরাসিদের পরাজিত করে রোসেটা স্টোনের দখল নিয়েছিল ব্রিটেন। রোসেটা স্টোন পুনরুদ্ধারের জন্যও আহ্বান জানিয়েছে মিশর। তবে, ব্রিটিশ মিউজিয়ামের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে ইতিবাচক কিছু বলা হয়নি।
5 / 10
ব্রিটিশদের চুরি করা দুর্মূল্য সামগ্রীর মধ্যে সবথেকে বিখ্যাত হল কোহিনূর হীরা। বর্তমানে, ভারত থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া এই বিশ্বখ্যাত হীরাটি প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মুকুটে রয়েছে। লন্ডনের জুয়েল হাউসের টাওয়ারে হীরাটি জনগণের দেখার জন্য প্রদর্শন করা হয়। এটি বিশ্বের বৃহত্তম কাটা হীরাগুলির অন্যতম। কোহিমূল হীরা ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের ময়ূর সিংহাসনে। ১৮৪৯ সালে ব্রিটিশরা ভারত অধিগ্রহণের পর বেশ কয়েকবার হাত বদল করে সেটি রানী ভিক্টোরিয়ার কাছে পৌঁছেছিল। শুধু ভারতই নয়, পাকিস্তান, ইরান, আফগানিস্তানও কোহিনূরের মালিকানা দাবি করেছে। তবে, আইনগতভাবে রত্নটি তারা পেয়েছিল বলে দাবি করে, ব্রিটিশ সরকার সাফ জানিয়েছে কোহিনূর ফেরত দেওয়া হবে না।
6 / 10
ভারত যেমন কোহিনূর হীরা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছে, তেমনই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দাবি উঠেছে আফ্রিকান গ্রেট স্টার বা কালিনান ওয়ান হীরা ফেরত দেওয়ার। এই হীরাটি বিশ্বের সবথেকে বড় কাটা হীরা। ১৯০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার থমাস কালিনানের খনিতে এই হীরা মিলেছিল। দুই বছর পরই ১৯০৭ সালে রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডকে সেই হীরা উপহার দেওয়া হয়েছিল। আজ, আফ্রিকান গ্রেট স্টার একটি ক্রুশের সঙ্গে রাজদণ্ডের উপর বসানো হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার পর থেকে সাফ জানানো হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিয়ন সরকার এবং সমসল্ত ব্যক্তিগত খনির সিন্ডিকেটগুলি অবৈধ ছিল৷ তাই গ্রেট স্টার হীরার উপর তাদেরই অধিকার রয়েছে।
7 / 10
নিউজিল্যান্ডের মাওরি উপজাতির পুরুষরা ত্বকে ট্যাটু করত। ট্যাটু করা পুরুষরা মাওরি সংস্কৃতিতে উচ্চ সামাজিক মর্যাদা ভোগ করতেন। মৃত্যুর পর সেই পুরুষদের শিরশ্ছেদ করে শুকিয়ে নেওয়া হত। এই শুকোনো মাথাগুলি মাওরিদের যে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৭৭০ সালে ব্রিটিশ-সহ ইউরোপীয়রা নিউজিল্যান্ডে পা রেখেছিল। তারপর থেকে এই মাওরি মাথাগুলি তাদের বাণিজ্যের অন্যতম পণ্যে পরিণত হয়েছিল। ব্রিটিশ জাদুঘরে এখনও এই চুরি করে আনা দেহাবশেষ প্রদর্শিত হয়। গত কয়েক বছর ধরে নিউজিল্যান্ড তাদের এই ঐতিহ্যবাহী সম্পদগুলি দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।
8 / 10
দক্ষিণ আফ্রিকার খোই খোই উপজাতির মহিলা ছিলেন সার্টজি "সারা" বার্টম্যান। তাঁর নিতম্বের আকার বড় হওয়ায়, তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সার্কাসের অংশ করার লক্ষ্যে। ষোল বছর বয়সে ডাচ ঔপনিবেশিকদের হাতে খুন হয়েছিলেন বার্টচম্যানের স্বামী। তারপর তাঁকে ক্রীতদাস হিসেবে এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। ১৮১০ সালে লন্ডনে তাঁকে কামোত্তেজক প্রদর্শনে বাধ্য করা হয়েছিল।
9 / 10
১৮৬০ সালের অক্টোবরে, দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধের সময়, ব্রিটিশ সৈন্যরা চিনের ইম্পেরিয়াল সামার প্যালেস লুঠ করেছিল। সেখানেই তারা একটি পিকিনিজ কুকুরছানার সন্ধান পেয়েছিল। কুকুরটিকে নিয়ে গিয়ে রানি ভিক্টোরিয়াকে উপহার দিয়েছিল ব্রিটিশ সেনারা। রানি লুট করে পাওয়া বলে রানি তার নাম দিয়েছিলেন লুটি। ১৮৭২ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সে উইন্ডসর দুর্গেই ছিল।
10 / 10
মাকদালা পাণ্ডুলিপি হল ইথিওপিয়ার বেশ কয়েকটি ধর্মীয় গ্রন্থ। মাকদালার যুদ্ধের পর ব্রিটিশরা, ইথিওপিয়ানদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল এটি। ১৮৬৮ সালে, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা মাকদালার পাহাড়ের উপরে অবস্থিত দুর্গ ১৫টি হাতি এবং শয়ে শয়ে খচ্চরের পিঠে করে এক হাজারেরও বেশি ধর্মীয় পাণ্ডুলিপি চুরি করেছিল। এর মধ্যে ৩৫০টি পাণ্ডুলিপি রয়েছে ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে। ১৯৯৯ সালে, ইথিওপিয়া থেকে লুঠ হওয়া জিনিসগুলি ফেরত আনার লক্ষ্যে 'অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য রিটার্ন অব দ্য মাকদালা ইথিওপিয়ান ট্রেজার্স' গঠিত হয়েছিল। সংগঠনটি কিছু কিছু ফিরিয়ে আনতে পেরেছে ঠিকই, তবে ধর্মীয় পাণ্ডুলিপিগুলি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি।