ওয়াশিংটন: করোনা টিকা (COVID Vaccine) হিসাবে কোভ্যাক্সিন (Covaxin) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি পাওয়ার পরই বড় পদক্ষেপ নিল ভারত বায়োটেক (Bharat Biotech) সংস্থার মার্কিন অংশীদার ওকুজেন (Ocugen Inc)। ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের উপর কোভ্যাক্সিনের টিকা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের জন্য এফডিএ(FDA)-র কাছে অনুমোদনের আবেদন জানাল ওই সংস্থা।
তৃতীয় দফার ট্রায়াল শেষ করার আগেই ভারতে কোভ্যাক্সিন জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমতি পেয়েছিল। অপেক্ষা ছিল কেবল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization) স্বীকৃতির। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে চলতি সপ্তাহেই করোনা টিকা হিসাবে কোভ্যাক্সিনকে মান্যতা দিয়েছে হু (WHO)। এরপরই আমেরিকায় শিশুদের করোনা টিকা হিসাবে কোভ্যাক্সিন দেওয়ার আবেদন জানাল ওকুজেন সংস্থা।
জানা গিয়েছে, ভারতে ২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৫২৬ জন শিশু ও কিশোর-কিশোরীর উপর কোভ্যাক্সিনের যে প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ট্রায়াল চালিয়েছে ভারত বায়োটেক সংস্থা, তার ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই আমেরিকায় শিশুদের করোনা টিকা হিসাবে কোভ্যাক্সিনের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের আবেদন জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতে শিশুদের উপর কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় দফার ট্রায়াল সম্পূর্ণ না হলেও, সংস্থা সূত্রে খবর প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের উপর তৃতীয় দফার ট্রায়ালে কোভ্যাক্সিন যে কার্যকারিতা দেখিয়েছে, শিশুদের উপর দুই দফার ট্রায়ালেও সেই অনুরূপ কার্যকারিতাই দেখা গিয়েছে।
শিশুদের পোলিয়ো সহ অন্যান্য টিকা তৈরির জন্য যে ভেরো সেল ম্যানুফাকচারিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়, কোভ্যাক্সিনও একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে বলে জানা গিয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালে গুরুতর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা হাসপাতালে ভর্তি করার মতো ঘটনা ঘটেনি বলেই জানা গিয়েছে।
চলতি বছরের মে থেকে জুলাই মাস অবধি কোভ্যাক্সিনের যে দ্বিতীয় দফার ট্রায়াল চলেছে, তাতে করোনা টিকার সুরক্ষা, শরীরে কতটা প্রতিক্রিয়া করছে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কিনা, সংক্রমণের বিরুদ্ধে কতটা সুরক্ষা দিতে সক্ষম- এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হয়।
মূলত তিনটি ভাগে টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা হয়, ২ থেকে ৬ বছর বয়সী, ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী এবং ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের উপর এই ট্রায়াল চালানো হয়েছে। ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের ২৮ দিন অন্তর করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, টিকা নেওয়ার পর ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের একই মাত্রায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে, যা প্রাপ্তবয়স্কদের উপর তৃতীয় দফার ট্রায়ালে দেখা গিয়েছিল। প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যেই এস১, আরবিডি. এন প্রোটিনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী ৫২৬ জন শিশু ও নাবালকদের মধ্যে, মায়োকার্ডিটিস, পেরিকার্ডিটিস, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া বা অ্যানাফিলেকটিকের মতো কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কেউ গুরুতর অসুস্থ বা মারাও যায়নি।
আরও পড়ুন: Pfizer Covid pill: বাড়িতে ওষুধ খেয়ে হবে করোনা নিরাময়! আশা দেখাচ্ছে ফাইজ়ার