নিউ ইয়র্ক: এক সপ্তাহ ধরে ফ্লু-র মতো সংক্রমণে ভুগছিল। মাথা ব্যথাও ছিল। অবশেষে মৃত্যু হল ২ বছরের শিশুর। মেনিনজাইটিসের কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু, পরে জানা গেল মেনিনজাইটিস বা অন্য কোনও অসুখ নয়, ছোট্ট জলজ পোকা অ্যামিবা (Brain-Eating Amoeba) খেয়ে নিয়েছে শিশুটির মাথা। শুনতে অবাক লাগছে! বাস্তবে এমনই ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (United States)।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বান্ডি পরিবারের ২ বছরের শিশুটির মৃত্যুর কথা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তার মা। তিনি জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ ধরে তাঁর ২ বছরের ছেলে উড্রো টার্নার বান্ডি সর্দি, বমি, মাথা ব্যথায় ভুগছিল। গত সপ্তাহে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রথমে তার ফ্লু-র চিকিৎসা করা হয়। তারপর যত সময় এগোয়, উড্রোর হ্যালুসিনেশন শুরু হয় এবং পরবর্তীতে কোমায় চলে যায়। তারপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, শিশুটির ব্রেন খেয়ে নিয়েছে অ্যামিবা। অবশেষে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় শিশুটির। মস্তিষ্কে অ্যামিবা সংক্রমণের বিষয়টি জানার পর চিকিৎসকেরা শিশুটির বাঁচানোর বিশেষ কোনও চেষ্টা করেননি এবং সিডিসি-র তরফেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ মৃতের মায়ের।
প্রসঙ্গত, মস্তিষ্ক-খেকো অ্যামিবার সংক্রমণের ফলে এই নিয়ে দুটো মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই একই কারণে মার্কিন মুলুকেই ৫০ বছর বয়সি এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে অ্যামিবা।
ব্রেন-খেকো অ্যামিবা আদতে কী? কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায়?
সিডিসি-র মতে, নেইগ্লিরিয়া ফোওলেরি এক ধরনের অ্যামিবা। এটি মূলত নদী, হ্রদ বা উষ্ণ প্রস্রবণের স্বচ্ছ গরম জলে পাওয়া যায়। সেই জলে স্নান করলে নাক দিয়ে শরীরের ভিতর ঢোকে নেইগ্লিরিয়া ফোওলেরি। তারপর সেটি সরাসরি মস্তিষ্কে বাসা বাঁধে। এটি প্রথমেই অলফ্যাক্টরি নার্ভের উপর আক্রমণ চালায়। তারপর মস্তিষ্কে সংক্রমণ ছড়ায়। তাই এটিকে এককথায় বলে, ব্রেন-খেকো অ্যামিবা। এটি একটি বিরল রোগ। এই রোগে সাধারণত কেউ বাঁচে না।
নেইগ্লিরিয়া ব্রেনের ভিতর ঢোকার একদিন পরেও সংক্রমণ উপসর্গ দেখা দিতে পারে, আবার ১২ দিন পরেও দেখা দিতে পারে। প্রথমে ফ্লু জাতীয় উপসর্গ- সর্দি, মাথাব্যথা, জ্বর, বমি হয়। তারপর ক্রমশ হ্যালুসিনেশন এবং কোমা হয়। সিডিসি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১ থেকে ১৮ দিনের মধ্যে মৃত্যু হয়।