
ঢাকা: বাংলাদেশের রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত জটিল। দিন তিনেক আগেও খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য় তৈরি মেডিক্যাল বোর্ডের অন্যতম সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। অবশেষে সেই জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে হার মানলেন খালেদা জিয়া। ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর নিজেদের সমাজমাধ্যমে জানিয়েছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। তাঁরা লিখেছে, ‘সকাল ৬টায় প্রয়াত হয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।’
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্য়ম প্রথম আলো-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার খালেদা জিয়ার শেষ কৃত্য (জানাজা) পালন করা হবে। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এই সংক্রান্ত আয়োজন হতে পারে বলেই জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য় সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বড়দিনের দিন মায়ের জন্য সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন ছেলে তারেক রহমান। নিজ দেশে ফিরে ১৬ মিনিটে রাজনৈতিক কর্মসূচি মিটিয়ে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলেন তারেক। মেডিক্যাল বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি তখনও বেশ জটিল ছিল। কিন্তু প্রত্যয়ী তারেক আশা জুগিয়েছিলেন ‘নতুন ভোরের’।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সময় তাঁর ছেলে তারেক রহমান, বৌমা জুবাইদা রহমান, নাতনি জাইমা রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-সহ দল ও পরিবারের অন্য সদস্যরা ওই হাসপাতালেই উপস্থিত ছিলেন। দোরগোড়ায় নির্বাচন। এই ‘কালবেলা’য় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রয়াণ, সব মিলিয়ে বিএনপি-র নেতাকর্মীদের মধ্য়ে ‘উৎকণ্ঠা’ তৈরি হয়েছে বলেই খবর। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সামনেও জমেছে ভিড়।
প্রসঙ্গত, একুশ সালে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তারপর থেকেই বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শরীরে ধীরে ধীরে ক্ষয় ধরতে থাকে। একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া, তার মধ্য়েই বার্ধক্যের কারণে তৈরি হওয়া দুর্বলতা — সব মিলিয়ে জীবনের কাছে যেন মাথা ঝোঁকাতে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। এমনকি, নভেম্বর খালেদা জিয়া ফের অসুস্থ হতেই তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হওয়া তা সম্ভব হয়নি।