
নয়াদিল্লি: এটা কি তবে মোদী-ম্যাজিক? প্রধানমন্ত্রীর চিন সফর শেষে পাকিস্তানের উপর চাপ তৈরি বেজিংয়ের। ইসলামাবাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়াল বেজিং। তবে কি বদলাচ্ছে সমীকরণ?
কী সেই প্রোজেক্ট?
দশক ধরে টাকার অভাবে আটকে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি থেকে পেশোয়ার যাওয়ার রেল উন্নয়নের কাজ। নাম এম এল-১ প্রোজেক্ট। বর্তমানে এই পথে একটি রেলরুট রয়েছে। কিন্তু বাণিজ্যিক পণ্য সরবরাহের মতো কাজে তা ব্যবহারের অযোগ্য। তাই খাইবার পাখতুন প্রদেশ হয়ে যাওয়া ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার পথের উন্নয়নের জন্য চিনের থেকে ঋণ চেয়েছিল শেহবাজ শরিফের সরকার। বেশ অনেকটা সময় এই নিয়ে আলোচনাও চলেছে।
বলে রাখা ভাল, এই রেল প্রোজেক্ট আবার চিন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর বা সিপেক-র অংশও। সুতরাং, বেজিংয়ের আগ্রহ থাকাই স্বাভাবিক। তা হলে সমস্যা কোথায়? নিক্কেই এশিয়া নামে এক সংবাদমাধ্যমকে পাকিস্তানের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এম এল-১ প্রোজেক্টের আওতায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক তাদের ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিতে প্রস্তুত। যে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল চিনের। তা নিতে হঠাৎ করেই এডিবির দিকে কেন ঝুঁকল ইসলামাবাদ? একাংশ বলছেন, এই প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়িয়েছে চিন। তা হলে কি ভেঙে গেল চিন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরির স্বপ্ন?
বরাবরই এই অর্থনৈতিক করিডরের বিরোধিতা করেছে ভারত। কারণ, চিন বেল্ট অ্য়ান্ড রোড প্রকল্পের অন্তর্গত CPEC-এর একটা অংশ পাক অধ্যুষিত কাশ্মীরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আর এই পাক অধ্যুষিত কাশ্মীরকে নিজেদের বলেই দাবি করে নয়াদিল্লি। সুতরাং, চিনের এই প্রকল্প ভারতের সার্বভৌমত্বে আঘাত আনছিল মনে করে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রক। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, CPEC থেকে এখনও পুরোপুরি ভাবে সরে দাঁড়ায়নি বেজিং। তবে ভবিষ্যৎ বদলালেও বদলাতে পারে। আপাতত ভাবে এই প্রকল্পের অংশ ML-1 রেল উন্নয়ন প্রকল্পে যে তারা টাকা ঢালতে নারাজ সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছে বেজিং।
কেন মুখ ফেরাল চিন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়নি বেজিং। প্রতিটা পদক্ষেপ মেপেই তারা এই কাজ করেছে। এই রেল উন্নয়নের কাজে যে আদৌ তাদের কোনও লাভ হবে কি না সেই প্রশ্নই ভাবিয়েছে বেজিংকে। পাশাপাশি পাকিস্তানের দিক থেকেও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ঋণের বোঝা। এই পরিস্থিতি আরও ২০০ কোটি টাকা ঋণ তাদের পরিশোধের ক্ষমতা রয়েছে কি না তাতেও সন্দেহ রয়েছে বেজিংয়ের।