বেজিং: সকালে বিবাদ, বিকেলেই ডিভোর্স। প্রতিনিয়ত বিচ্ছেদের এমন সব নজির তৈরি হচ্ছিল চিনে (China)। বেজিংয়ের সরকারি তথ্য যে হিসেব দিচ্ছে তাতে, ২০২০-র শেষ তিন মাসে বিচ্ছেদে হয়েছে ১০ লক্ষ দম্পতির। তাই অতিমারীর বছরেও করোনার (COVID19) উৎস চিনকে ভাবিয়েছে এই বিষয়টা। নতুন বছর শুরু হতেই তাই বিচ্ছেদের নিয়মে বড়সড় বদল আনল চিন। আর তাতেই বেড়েছে বিপত্তি।
একটা সময় আইনি লড়াই ছাড়া বিচ্ছেদ হত না চিনে। পরে মহিলাদের স্বাবলম্বী হওয়ার হার বাড়তে শুরু হওয়ায় সেই নিয়মে বদল এনেছিল চিন। চিনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২০০৩ সাল থেকে আইনি লড়াইয়ে দরকার পড়ে না। দুজনের ইচ্ছা থাকলেই বিচ্ছেদ সম্ভব কোনও ঝুট-ঝামেলা ছাড়াই। আর সেই নিয়মের আশ্রয় নিয়েই বিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়তে থাকে হু হু করে। প্রত্যেক বছর সংখ্যাটা যেভাবে বাড়ছে তাতেই উদ্বেগে চিনের কমিউনিস্ট সরকার।
১ জানুয়ারি থেকে নতুন সিভিল কোড এনেছে চিন। আর সেখানে বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নতুন এক নিয়মের সংযোজন হয়েছে, যার নাম ‘কুলিং অফ পিরিয়ড’। অর্থাৎ এবার থেকে আর চাইলেই ডিভোর্স হবে না। বিচ্ছেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সময় নিতে হবে। ৩০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। আর নতুন এই নিয়মে বেজায় চটেছেন চিনারা।
সম্পর্কই যখন তলানিতে, তখন আর এক মাস কিসের অপেক্ষা? এই প্রশ্নেই সরব সে দেশের বাসিন্দারা। চিনের প্রচলিত সোশ্যাল মিডিয়া ‘ওয়েবো’ জুড়ে ট্রেন্ডিং এই বিষয়টা। কেউ বলেছেন, ‘সম্পর্ক যখন ভেঙেই গিয়েছে তখন এই এক মাস একসঙ্গে থাকাটা অসহ্য হয়ে উঠতে পারে।’ কেউ বলেছেন, ‘আমাদের কি বিচ্ছেদেরও স্বাধীনতা নেই? কারও কারও মতে, এই নিয়ম যদি মানতেই হয়, তাহলে হঠকারি সিদ্ধান্তে বিয়ে করাটাও উচিৎ নয়।’
আরও পড়ুন: মহিলার হৃৎপিণ্ড কুচি কুচি করে কেটে আলুর তরকারি রান্না করল যুবক
এই নিয়ম বলবৎ করতে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এমন এক আধিকারিক লো জুন বলেন, ‘কেউ কেউ সকালে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিকেলেই বিচ্ছেদ করে ফেলেন। এই ধরনের ঘটনা কমাতেই একটি নিয়ম আনা হয়েছে।’ তবে এই নিয়মের ক্ষেত্রেও রয়েছে ব্যতিক্রম। কেউ গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হলে সে ক্ষেত্রে কুলিং অফ পিরিয়ড ছাড়াই বিচ্ছেদ সম্ভব।