
ঢাকা: ‘বিদেশি বউ কিনবেন না’ বাংলাদেশে থাকা চিনা দূতাবাস থেকে রবিবার এমনই অদ্ভুত সতর্কতা জারি করা হল চিনা নাগরিকদের জন্য। বিষয়টা কী? কেন এমন অদ্ভুত সতর্কতা জারি করল চিনা দূতাবাস?
চিনা নাগরিকদের বিদেশি বউ কেনার মানসিকতা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এমনকি চিনা নাগরিক ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করার ক্ষেত্রেও বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকার কথাও বলা হয়েছে। গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় চিনা নাগরিকরা যেন বিদেশে বিয়ে সংক্রান্ত চিনা আইন মাথায় রাখেন। বেআইনি ভাবে বিয়ে না করেন এবং সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় মানব পাচারের সম্পর্কে সচেতন থাকেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় চিনা নাগরিকরা যেন বিদেশি বউ কেনার ভাবনা ত্যাগ করেন এমনকি বিদেশে বিয়ে করার আগে ২ বার ভেবে নেন।
দূতাবাস চীনা আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, “কোনও বিবাহ সংস্থাকে সীমান্তবর্তী বিবাহ বা ম্যাচমেকিং পরিষেবার অনুমতি দেওয়া হয় না। গোপনে অথবা প্রকাশ্যে কোনও রকম বিয়ের অনুমতি দেয় না। কোনও ব্যক্তিকে প্রতারণার মাধ্যমে বা ব্যক্তিগত লাভের জন্য এই জাতীয় কার্যকলাপ প্রকাশ্যে বা গোপনে পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হয় না।”
কেন এমন ঘটনা ঘটল? জানা যাচ্ছে, চিনে নারী-পুরুষের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। আনুমানিক ৩ কোটি চিনা পুরুষ জীবনসঙ্গী খুঁজে পাচ্ছেন না। তাঁদের ‘অবশিষ্ট পুরুষ’ও বলা হচ্ছে। যার ফলে বাড়ছে বিদেশি বউয়ের চাহিদাও।
চিনা নাগরিকদের মধ্যে বিদেশ থেকে টাকার বিনিময়ে মহিলা এনে বিয়ে করার প্রবণতা বেড়েছে। বাস্তবে বিয়ের আড়ালে বেড়েছে মানব পাচারের ঘটনা। অভিযোগ চিনে বিশেষ করে চাহিদা বেড়েছে বাংলাদেশী মহিলাদের। তাই ঘুর পথে বিয়ের নাম করে চলছে মহিলাদের পাঠানোর কাজও। বাংলাদেশে এমন বহু চক্র নাকি গজিয়ে উঠেছে ইতিমধ্যেই। যা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন বেজিং।
চিনা দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, অবৈধ বিদেশি বিয়ে করলে সেই ঘটনার জন্য মানব পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হতে পারে সেই সব ব্যক্তিকে।
বাংলাদেশের দণ্ডবিধি এবং মানব পাচার বিরোধী আইনের অধীনে, মানব পাচারের জন্য কেউ গ্রেফতার হলে সাত বছরের কারাদণ্ড, সর্বাধিক মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে। সর্বনিম্ন ৫,০০,০০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে উস্কানি, পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন বা সহায়তা করে তাদের তিন থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।