শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ দিকে যাচ্ছে, এ কথা আগেই সকলের কাছে পরিস্কার ছিল। লাগাতার লোডশেডিং, ক্রমশ বাড়তে থাকা জ্বালানির দাম এবং খাদ্যাভাবের কারণে মানুষের সহ্যের সীমা অতিক্রান্ত হয়েছিল। সাধারণ লঙ্কাবাসীর বিক্ষোভের আগুন এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে আজই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ। রাজাপক্ষ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে শ্রীলঙ্কা শাসন করছে। মাহিন্দা দেশে মারাত্মক প্রভাবশালী ছিলেন। কিন্তু কে এই মাহিন্দা রাজাপক্ষে? কীভাবে তিনি ক্ষমতার শীর্ষ পৌঁছলেন?
শুরুর জীবন ও শিক্ষাগত যোগ্যতা
১৯৪৫ সালে দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার উইরাকেটিয়া শহরে জন্মগ্রহণ করেন মাহিন্দা। ছয় জন ভাইয়ের মধ্যে মাহিন্দা দ্বিতীয়। রাজাপক্ষ পরিবারের মোট ৪ জন জাতীয় রাজনীতিতে রয়েছেন। ১৯৭০ সালে প্রথমবার শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন মাহিন্দা। হাম্বানতোতা জেলা থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কলোম্বো আইন কলেজ থেকে তিনি আইনে স্নাতক হয়েছিলেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৯৪ সাল অবধি তিনি পেশাগতভাবে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছিলেন।
রাজনৈতিক জীবন
২০০৫ সালে মাহিন্দা রাজাপক্ষ প্রথম শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি বা এসএলএফপির হয়ে প্রথমবার দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন, ২০১০ সাল অবধি প্রথম দফায় তিনি দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। জঙ্গি সংগঠন লিবারেশন টাইগারস অব তামিল ইলাম বা এলটিটিইয়ের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। ২০০৯ সালের এলটিটিইকে পরাস্ত করেন তিনি। এর ওপর ভর করেই ২০১০ সালের নির্বাচনে পুনরায় দ্বিতীয়বারের জন্য দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজাপক্ষ। দুর্নীতির অভিযোগে নিজের প্রাক্তন শরিক মাইথ্রিপালা সিরিসেনারা কাছে ২০১৫ সালের নির্বাচনের তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর অবধি সংসদে তিনি বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৯ সালে আবারও ক্ষমতার অলিন্দে ফিরে আসেন মাহিন্দা। দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ভাই তথা দেশের প্রাক্তন প্রতিরক্ষা প্রধান গোতাবায়া রাজাপক্ষ দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন।