
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পরেই নিজের পূর্ববর্তী অবস্থানের ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে রাশিয়া-কে ‘কাগুজে বাঘ’ বলে বসলেন ট্রাম্প। ব্যাস! আর যায় কোথায়? রে রে করে উঠল ক্রেমলিন-ও। সংবাদমাধ্যমকে ডেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। যেটা বললে, সেটাও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
পেসকভ বলেছেন, ‘রাশিয়া মোটেও বাঘ নয়। সেটা ট্রাম্প ঠিক-ই বলেছেন। কিন্তু রাশিয়া হল ভাল্লুক (বিয়ার)। আর ট্রাম্প তো জানেনই, যে ভাল্লুক কখনই কাগজের হয় না। রাশিয়া হল আসল ভাল্লুক।’ ট্রাম্পের নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশিয়াকে নিয়ে একের পর এক তির্যক পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ক্রেমলিনের তরফে এরকম কড়া ও ব্যাঙ্গাত্মক বিবৃতি আসায় মার্কিন-রুশ সম্পর্কের জটিলতা আরও বাড়ল, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
আসলে ট্রাম্প রাষ্ট্রসংঘের ৮০-তম জেনারেল অ্যাসেম্বলি বা সাধারণ সম্মেলনে যাওয়া ইস্তক রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগে চলেছেন। যা শুনে বোঝাই যাচ্ছে, মাত্র দু হপ্তা আগে পুতিনকে ‘ভাল বন্ধু’ বলা ট্রাম্পের সে মোহ কেটে গেছে। ১৫ অগাস্ট পুতিনের সঙ্গে আলাস্কাতে বৈঠকের পর নিজের পূর্ববর্তী অবস্থান সম্পূর্ণ পাল্টে ট্রাম্প এখন জেলেনস্কি-কে ‘ভাল বন্ধু’ মনে করেন। ট্রাম্প এটাও বলেছেন, জেলেনস্কি এই যুদ্ধ জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। এই প্রথম রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে কিভের জয়ের পক্ষে সওয়াল করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একদা তিনি-ই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি করিয়ে দেবেন বলা ট্রাম্প এখন রাষ্ট্রসংঘে গিয়ে বললেন, ‘ন্যাটো-র উচিত কোনও রুশ যুদ্ধবিমান ইউরোপের বায়ুসীমা লঙ্ঘন করলেই গুলি চালানো।’
ট্রাম্পের এই অবস্থান বদলকে অবশ্য মোটেও ‘হঠকারী’ সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, রাশিয়াকে ‘কাবু’ করতে না পেরে এবার ন্যাটো-কে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নামার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন ট্রাম্প। তাঁর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে চলা চিন-ভারতের সঙ্গেও মস্কোর নতুন মাখামাখি ট্রাম্পের ঘোরতর নাপসন্দ। তাই কি হুঁশিয়ারি-সতর্কতা ছেড়ে প্রথমেই একেবারে ‘গুলি চালাতে’ বললেন ন্যাটো-কে?