পৃথিবীর ধ্বংস আসন্ন? তাই কি মাটির নিচে আস্ত শহর বানিয়েছে আমেরিকা?

আমেরিকাতে মাটির নিচে আস্ত শহর। ১৭০টি বেস। প্রতিটি বেস একে ওপরের সঙ্গে যুক্ত। গাড়িতে চেপে যাতায়াত করা যাবে অনায়াসেই।

পৃথিবীর ধ্বংস আসন্ন? তাই কি মাটির নিচে আস্ত শহর বানিয়েছে আমেরিকা?

| Edited By: সোমনাথ মিত্র

May 08, 2025 | 1:35 PM

প্রবল ভূমিকম্প বা সুনামিতে গোটা মানবসভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মুখে। সেটা আঁচ করতে পেরে আমেরিকা মাটির নিচে গোপন ঠিকানায় সমস্ত আধুনিক সুযোগ সুবিধা যুক্ত শহর বানিয়ে রেখেছে। জরুরি পরিস্থিতিতে সেখানে আশ্রয় নেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট-সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি আধিকারিকরা— হলিউডি সিনেমায় এমনটা অনেকেই দেখেছেন। কিন্তু এবার একেবারে সিনেমার পাতা থেকে সেই একই চিত্রনাট্য যেন বাস্তবে এনে ফেললেন এক প্রাক্তন মার্কিন সরকারি আধিকারিক। এক সাক্ষাৎকারে বললেন, ২১ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করে আমেরিকার মাটির নিচে আস্ত শহর বানিয়ে ফেলেছে আমেরিকা। টাকার অঙ্কে খরচ হয়েছে ১৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। মানবসভ্যতা যেদিন ধ্বংসের মুখোমুখি হওয়ার মতো পরিস্থিতি হবে, সেদিন নাকি ওই শহরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও বিশ্বের ধনকুবেরেরা বসবাস করতে পারবেন।

ক্যাথেরিন অস্টিন ফিট কাজ করতেন মার্কিন হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টে। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ (প্রথম) বুশের আমল। ক্যাথেরিন দফতরে কর্মরত অবস্থাতেই টের পান, মার্কিন কোষাগার থেকে কোটি কোটি ডলার কোনও এক অদৃশ্য কারণে নাকি প্রায়ই গায়েব হয়ে যেত। কেউ সেই টাকার হিসাবও চাইত না, তদন্তের নির্দেশও দিত না। ১৯৯৮ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত এমন নাকি প্রায়ই ঘটত। ক্যাথেরিন সেই গায়েব হওয়া কোটি কোটি ডলারের খোঁজে তদন্ত শুরু করেন। আর সেই তদন্তেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সম্প্রতি ফক্স নিউজের প্রাক্তন সঞ্চালক টাকার কার্লসনের পডকাস্টে গিয়ে এই বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারটি দেন ক্যাথরিন। যেখানে তিনি দাবি করেন, ‘আমেরিকাতে মাটির নিচে গোপন ঠিকানায় বসবাসের জন্য বিলাসবহুল আধুনিকতম একটি শহর তৈরি করেছে মার্কিন সেনা ও প্রশাসন। ভয়ঙ্কর কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে এসে মানবসভ্যতাকে শেষ করে দিতে পারে বা পরমাণু হামলায় দেশের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়তে পারে– এমন দিনের কথা মাথায় রেখেই কমবেশি ১৭০টি ‘আন্ডারগ্রাউন্ড বেস’ তৈরি করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিটি এরকম ‘বেস’ একে অপরের সঙ্গে একটি বিশাল ট্রান্সপোর্টেশন নেটওয়ার্ক দ্বারা যুক্ত। মানে শহরের এক বেস থেকে অন্য বেস-এ গাড়িতে চেপে যাওয়া যাবে। এতটাই বড় গোটা শহরটা। যেমন এখন শহরের এক রাস্তা থেকে আপনি অপর রাস্তায় গাড়িতে চেপে যেতে পারেন, মাটির নিচে মার্কিন গোপন শহরেও ধনকুবেররা সেই একই পরিষেবা পাবেন সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেলেও।

এমনিতে অবশ্য আমেরিকাতে মাটির নিচে গোপন আস্তানার খবর খুব নতুন নয়। মার্কিন সেনার গোপন অপারেশনের জন্য একাধিক কমান্ড সেন্টার রয়েছে মাটি বা সমুদ্রের নিচের গোপন আস্তানায়। ভার্জিনিয়া, কলোরাডো বা পেনিসেলভ্যানিয়াতে মাটির নিচে এমার্জেন্সি ক্রাইসিস সেন্টার রয়েছে। কিন্তু ক্যাথেরিনের দাবির মাত্রা অন্য। তাঁর দাবি, পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলেও ধনকুবেররা যাতে বিলাসবহুলভাবে বেঁচে থাকতে পারেন, তার জন্যই নাকি ১৭ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে এই শহর বানিয়েছে আমেরিকা। এবং ওই শহর তৈরি রয়েছে আম মার্কিনিদের অজান্তে, তাঁদেরই ট্যাক্সের টাকাতে। তাহলে যাঁদের টাকায় শহর তৈরি হয়েছে, ধ্বংসের মুহূর্তে তাঁরাই সেখানে ঠাঁই পাবেন না?