কায়রো: প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে খুব সাধারণ প্রশ্ন হল, ‘তুমি আমার জন্য কী করতে পার?’ উত্তরে সকলেই সাধারণত বলে থাকেন, ‘তোমার জন্য আমি যা খুশি তাই করতে পারি’। কিন্তু, এই সংলাপ সাধারণত হয় কৌতুকের বিষয়। প্রশ্নকর্তা বা উত্তরদাতা কেউই আশা করে না যে, প্রেমাস্পদের জন্য তারা, আকাশের চাঁদ এনে দেওয়ার মতো কোনও অস্বাভাবিক কাজ করে দেখাবে। কিন্তু, পৃথিবীকে পাগল প্রেমিকের তো অভাব নেই। এরকমই এক পাগল প্রেমিকের সন্ধান মিলল মিশরে। প্রেমিকা পরীক্ষায় ব্যর্থ হবে, এই আশঙ্কায় তিনি প্রেমিকার কলেজে অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন। আর এর জন্য তাঁকে এখন জেলের ঘানি টানতে হতে পারে।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মিশরের ঘারবিয়া প্রদেশে। ওই ব্যক্তিকে তাঁর বাগদত্তাই এই কাজ করার জন্য চ্যালেঞ্জ করেছিল কি না, তা জানা যায়নি। তবে, মিশরের ‘দ্য ন্যাশনাল নিউজ’ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুসারে, মিশরের প্রসিকিউটর জেনারেল জানিয়েছেন, ২১ বছরের ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তাঁর বাগদত্তা এখনও কলেজে পড়েন। প্রেমিকার বাড়ি থেকে শর্ত দেওয়া হয়েছিল তাঁর কলেজের রড়া শেষ হলে, তবেই বিয়ে হবে।
পরীক্ষা ভালই দিয়েছিলেন প্রেমিকা। কিন্তু, ফল প্রকাশের দিন যত এগিয়ে আসছিল, ওই ব্যক্তির মনে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিল যে, তাঁর প্রেমিকা পাশ করতে পারবেন না। পুলিশকে সে জানিয়েছে, তাঁর বাগদত্তাকে যদি আরও এক বছর কলেজে পড়তে হত, তাহলে তাঁদের বিয়ে স্থগিত হয়ে যেত। এই আশঙ্কাতেই তিনি ফল প্রকাশের ঠিক আগে তাঁর বাগদত্তার যে কলেজে পড়তেন, সেখানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, উত্তরপত্র এবং ফলাফল পুড়ে গেলে সকলকেই পাশ করিয়ে দেওয়া হবে। তাঁর প্রেমিকাও পাশ করে যাবেন।
কলেজ ভবনে অগ্নি সংযোগ করার পরই তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তবে, স্থানীয়রা কলেজের কাছে দেখে ফেলেছিলেন। তাঁরাই পুলিশকে ওই ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। পরে কায়রোর কাছ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সৌভাগ্যক্রমে, কলেজ ভবনে আগুন লাগার ফলে কেউ হতাহত হননি। দমকলকর্মীরা দ্রুত আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয় এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কয়েক হাজার মার্কিন ডলার বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর রেকর্ডও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে আগুনে।
আপাতত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁকে দ্রুত আদালতে পেশ করা হবে। এই অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির কারাবাস হতে পারে।