
ওয়াশিংটন: বিজ্ঞান আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ- এই প্রশ্ন ছিল শুরু থেকেই। সেই প্রশ্নই এখন কিছুটা বদলে দাঁড়িয়েছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ? যেখানে এআই মানুষের চাকরি খেয়ে নেওয়ার ভয় ধরাচ্ছে, সেখানেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন কাজ করল, যা এতদিন চিকিৎসকরাও করতে পারছিলেন না। চার বছরের এক শিশুর বিরল রোগ চিহ্নিত করল চ্যাটজিপিটি। ওই শিশুর মা এর আগে বহু চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেও, কেউই রোগ ধরতে পারেননি। শেষে চ্যাটজিপিটি-ই রোগ ধরিয়ে দিল।
করোনাকালে জন্ম অ্যালেক্স নামক ওই শিশুর। দাঁত ওঠার সময় থেকে তাঁর অস্বাভাবিক ব্যথা হতে শুরু হয়। দাঁতের বৃদ্ধিও ধীর হয়, এমনকী ভারসাম্য রাখতেও সমস্যা হচ্ছিল ওই শিশুর। ছেলের সমস্যা নিয়ে তাঁর মা কোর্টনি কমপক্ষে ১৭ জন চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন, কিন্তু কেউই সমস্যার গোড়ায় পৌঁছতে পারেনি।
ধীরে ধীরে অ্যালেক্সের অবস্থার অবনতি হতে থাকলে, একদিন নিরুপায় হয়েই কোর্টনি চ্যাটজিপিটি-র কাছে প্রশ্ন করেন। অ্য়ালেক্সের যাবতীয় উপসর্গের পাশাপাশি এমআরআই রিপোর্টও আপলোড করেন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চ্যাটজিপিটি উত্তর দেয়, অ্যালেক্সের টেদার্থ কর্ড সিনড্রোম হয়েছে।
কী এই রোগ, এটি বিরল একটি নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার, যা স্পাইনাল কর্ড বা শিরদাড়ার পাশে থাকা টিস্যুর নড়াচড়া সীমিত করে দেয়। চ্যাটজিপিটির থেকে এই উত্তর পেয়ে অনলাইন সাপোর্ট কমিউনিটিতেও এই প্রশ্ন করেন। কোর্টনি জানতে পারেন, সত্যিই শিশুদের মধ্যে এই ধরনের বিরল রোগ হয়।
এরপর এক নিউরোসার্জনকে দেখালে, তিনিও জানান চ্যাটজিপিটি সঠিক উত্তরই দিয়েছিল। অ্যালেক্সের স্পাইনাল সার্জারি করা হয়। বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পথে অ্যালেক্স।
যেখানে চিকিৎসকরা রোগ নির্ণয় করতে পারছিলেন না, সেখানেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মডেল সঠিক রোগ নির্ণয় করায় অবাক সকলে। অনেকেই আবার চিকিৎসাক্ষেত্রে এআই-র ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করছেন। তবে চিকিৎসকদের মতে, চ্যাটজিপিটির মতো এআই টুল সাহায্য করলেও, তা কখনওই চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতাকে হার মানাতে পারে না।