জাকার্তা: অপরাধ করেছেন, তাই জেলেই শাস্তির দিনগুলি কাটাচ্ছিলেন। তবে কোনওদিনই যে আর জেল থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন না, তা কখনওই ভাবেননি তারা। মধ্যরাতের অগ্নিকাণ্ডে (Fire) এক নিমেয়েই বদলে গেল গোটা চিত্রটাই। জেলের ভিতরেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল ৪১ জনের। দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে আরও ১২ জনকে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতেই আচমকা আগুন লাগে ইন্দোনেশিয়া(Ind0nesia)-র জাভা দ্বীপ(Java Island)-র একটি কারাগারে আগুন লাগে। ঘুমের মধ্যেই আগুনে পুড়ে মারা যায় ৪১ জন। জাকার্তার অদূরেই অবস্থিত তাঙ্গেরাং পেনিটেনশিয়ারিতে ওই জেলে আগুন লাগার কারণ হিসাবে বিদ্যুৎ সংযোগে কোনও বিভ্রাট এবং সেখান থেকেই শর্ট সার্কিট (Short Circuit) হয়ে আগুন লাগে।
#Breaking Fire broke out at a prison in Jawa, Indonesia killed 41 and 39 wounded pic.twitter.com/43odPbBWQQ
— The HbK (@The5HbK) September 8, 2021
কারাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত জেলের একটি ব্লকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই ব্লকে মূলত মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদেরই রাখা হত। গতকাল মধ্যরাতে আচমকাই ওই ব্লকে আগুন লাগে। সেই সময়ে অধিকাংশ বন্দিই ঘুমোচ্ছিলেন। হঠাৎ কালো ধোঁয়া ঢুকতেই দমবন্ধ হয়ে আসে তাদের। লোহার গরাদ ধরে তারা চিৎকার করতে শুরু করেন। জেল কর্তৃপক্ষের কাছে দরজা খুলে দেওয়ার অনুরোধও জানান। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন গ্রাস করে নেয় গোটা ব্লকটিই।
জেল কর্মীরা ঢোকার চেষ্টা করলেও আগুন ও বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তারা প্রবেশ করতে পারছিলেন না। আগুন লেগেছে, এটি টের পাওয়ার পরই দমকলে খবর দেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পড়ে উদ্ধারকারী দল ও দমকল বাহিনী। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর রাত তিনটে নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপরই একে একে বের করে আনা হয় বন্দিদের। দেখা যায়, অধিকাংশ বন্দিই বিষাক্ত ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন, আবার অনেকে আগুনের গ্রাসে চলে যাওয়ায় পুড়ে মৃত্যুও হয়েছে। অনেক বন্দির দেহ আগুনে এতটাই ঝলসে গিয়েছে যে তাদের চেনা যাচ্ছে না।
An investigation is underway after at least 41 people were killed and dozens more injured in a prison fire in the early hours of Wednesday in Tangerang, Indonesia, just outside the capital city. https://t.co/ndnzFT2c1K
— Twitter Moments (@TwitterMoments) September 8, 2021
জাকার্তার পুলিশ প্রধান ফাদিল ইমরান সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪১ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। ৭২ জনেরও ছোটখাটো আঘাত লেগেছে। যারা গুরুতর আহত হয়েছেন, তাদের তাঙ্গেরাং জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অল্প আহতদের জেলের কাছেই অবস্থিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়েছে।”
পুলিশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও অবধি আগুন লাগার সঠিক কারণ জানা না গেলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণেই আগুন লেগেছিল বলে সব্দেহ। পুলিশ কর্তা নিজেও বলেন, “আমি নিজে ঘটবনাস্থান খতিয়ে দেখেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে শর্ট সার্কিটের কারণেই আগুন লেগেছে।”