
ঢাকা: ২০০৭ সাল। বাংলাদেশে গঠিত হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। হাসিনা তখনও রাজনৈতিক ময়দানে। মিটিং, মিছিল চালাচ্ছেন। দেশজুড়ে উদ্বেগ পরিস্থিতি। কিছুটা এখনকার মতো। চিন্তিত ব্যবসায়ী ও শিল্পগোষ্ঠীর কর্তারা। যাঁদের মধ্যে আবার অন্যতম তারেক রহমান। এই সময়কালে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছিল একাধিক দুর্নীতি মামলা। ওই বছরের মার্চ মাসে গ্রেফতার হন তারেক রহমান। টানা এক বছরের বন্দি দশা। এরপর ২০০৮ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর দেশছাড়া হন বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্য়ান।
সেই থেকেই বাংলাদেশের বাইরেই রয়েছেন তারেক। বর্তমানে লন্ডনই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা। মাস কতক আগে সেখানেই চিকিৎসার জন্য মা খালেদা জিয়াকে ডেকে এনেছিলেন তিনি। তারেক বাংলাদেশ থেকে ভৌগলিক ভাবে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে নয়। পদ্মাপাড়ের জল-হাওয়া এখন বদলে গিয়েছে। পরিস্থিতি আগের মতোই উদ্বেগজনক। শুধু একটাই তফাৎ। তারেকের পরিপন্থী নয়। কিন্তু তারপরেও ‘ঘরের ছেলে’ ঘরে ফিরছে না কেন?
শনিবার অন্তর্বতী সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে, তারেক রহমানকে নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই তাঁদের। ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে তাঁরা। এদিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘তারেক রহমান এখনই দেশে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তাঁর অবারিত এবং একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। সরকারের তরফে এ বিষয়ে কোনও বাধা বা আপত্তি নেই।’
কিন্তু হঠাৎ করে এই বার্তার যৌক্তিকতা কী? গত রবিবার থেকেই বেশ অসুস্থ বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়া। কিন্তু মা অসুস্থ থাকলেও দেশের ফেরার প্রসঙ্গে ‘ব্রাত্য’ ছিলেন তারেক। তবে সম্প্রতি নিজের সমাজমাধ্য়মে তিনি লিখেছেন, ‘এমন সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা যে কোনও সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সকলের মতো সেটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাঁর একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ আমার নেই। আর এই বিষয়ে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার অবকাশও নেই।’ অর্থাৎ ইঙ্গিতেই বাংলাদেশে না ফিরতে পারার আক্ষেপ করেছেন তিনি। অবশ্য সরকারের তরফে এই নিয়ে কোনও বাধা নেই বলেই স্পষ্ট করে দিলেন প্রেস সচিব।