ব্যাঙ্কক: একজন ৪৫ বছরের মহিলা রাজনীতিক। তাঁর ৬৪ বছর বয়সী স্বামী। আর তাদের ২৪ বছর বয়সী দত্তক পুত্র। সেই পুত্র আবার বৌদ্ধ সন্ন্যাসী। এরাই এই ঘটনার কেন্দ্রীয় চরিত্র। ২৪ বছর বয়সী পুত্রকে এক বছর আগেই দত্তক নিয়েছিলেন এই দম্পতি। সম্প্রতি, ২৪ বছরের এই দত্তক পুত্র এবং ৪৫ বছরের মহিলা রাজনীতিককে হাতে-নাতে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেছেন স্বামী। স্বামীর অভিযোগ, দত্তক পুত্র এবং তাঁর স্ত্রীয়ের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। শুনলে প্রথমে মনে হতে পারে মন গড়া কাহিনি। কিন্তু চিত্রনাট্য লেখকরাও বোধহয় এতটা নাটকীয় কাহিনি লিখতে সাহস করবেন না। এই ঘটনা নিয়েই উত্তাল থাইল্যান্ড। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে, এই খবর থাইল্যান্ডের সীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বে।
অভিযুক্ত মহিলা রাজনীতিকের নাম প্রপাপর্ন চোইওয়াদকোহ। মধ্য থাইল্যান্ডের প্রদেশ, সুখোথাইয়ের জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। বর্তমানে, তিনি স্থানীয় এক চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হিসাবে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের মার্চ মাসে তিনি থাইল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট পার্টির সদস্য হয়েছিলেন। গত বছর থাইল্যান্ডের এক বৌদ্ধ মন্দির থেকে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ফ্রা মাহাকে দত্তক নিয়েছিলেন চোইওয়াদকোহ এবং তাঁর স্বামী তাই। জানা গিয়েছে, ফ্রা মাহার জন্য অত্যন্ত কষ্ট হয়েছিল চোইওয়াদকোহের। তারপরই তাকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই দম্পতি। তবে, প্রথম থেকেই তাঁর স্ত্রী এবং সদ্য দত্তক নেওয়া বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করেছিলেন তাই।
প্রপাপর্ন চোইওয়াদকোহ এবং তাঁর দত্তক পুত্র ফ্রা মাহা
তাই জানিয়েছেন, ক্রমশ তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের দত্তক সন্তানের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছিল। অনেক সময়ই ফ্রা মাহার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিতেন প্রপাপর্ন চোইওয়াদকোহ। তাই দীর্ঘক্ষণ ধরে দরজা ধাক্কা দিতেন। কিন্তু তারা দরজা খুলত না। পরে, ঘর থেকে বেরিয়ে এসে চোইওয়াদকোহ বলতেন, বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর সঙ্গে তিনি প্রার্থনা করছিলেন। তাই-এর মনে এই নিয়ে সন্দেহ গাঢ় হচ্ছিল। ঘটনার দিন তাই ব্যাঙ্ককে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। বারবার ফোন করার পরও চোইওয়াদকোহ সাড়া না দেওয়ায় তাইয়ের সন্দেহ গাঢ় হয়েছিল। ৫ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে তিনি সুখোথাইয়ে ফিরে এসেছিলেন। বাড়ি ফিরে দত্তক ছেলের ঘরে গিয়ে তিনি ওই বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এবং তাঁর স্ত্রীকে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় আবিষ্কার করেন।
দুজনকে ওই অবস্থায় দেখার সঙ্গে সঙ্গে তাই ফোনের ক্যামেরা চালু করে তাদের ভিডিয়ো তোলা শুরু করেছিলেন। সেই ভিডিয়ো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। চোইওয়াদকোহ এবং ফ্রা মাহা যে সম্পূর্ণ নগ্ন, তাও ভিডিয়োতে চাদর তুলে দেখান তাই। সেই সঙ্গে তাদের প্রশ্ন করেন, ‘তোমরা দুজনে খুশি তো?’ তাই জানিয়েছেন, ওই সময় তাঁর অত্যন্ত মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। প্রতারিত বোধ করছিলেন তিনি।
এই কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর থেকে, আপাতত পলাতক ফ্রা মাহা। চোইওয়াদকোহ অবশ্য পালানোর উপায় নেই। তাঁর দাবি, দত্তক পুত্রের সঙ্গে কোনও অবৈধ সম্পর্ক নেই তাঁর। ভিডিয়োতে যে ছবি ধরা পড়েছে, তা দেখে মনে হতে পারে তারা যৌনতায় লিপ্ত। কিন্তু, বাস্তবে কিছুই ঘটেনি। অভিযুক্ত থাই রাজনীতিবিদ বলেছেন, “আমরা সেই সময় সেক্স করিনি। কিছুই ঘটেনি। ভিডিয়ো দেখে যা মনে হচ্ছে, তেমন কিছু হয়নি। ওর কিছু সমস্যা ছিল। আমরা সেই নিয়েই কথা বলছিলাম।” কিন্তু, তাঁরা নগ্ন ছিলেন কেন? চোইওয়াদকোহের দাবি, “আমরা স্নান করতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম।”