
ইসলামাবাদ: জীবন-মৃত্যুর মাঝের অন্ধকারে ইমরান খান। তিনি মৃত না জীবিত, সেই প্রশ্নই এখন ঘিরে ধরেছে পাকিস্তানকে। তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা। যদিও জেল কর্তৃপক্ষ সেই সব জল্পনাকে নস্যাৎ করেছে। কিন্তু তাঁদের কথা বিশ্বাস করতে রাজি নয় ইমরানের পরিবার। তাঁর পুত্রের দাবি, বাবার ছবি প্রকাশ্যে আনতে হবে। এমনকি, বাবার যদি কিছু হয় তা হলে জল বহুদূর পর্যন্ত গড়াবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পুত্র কাশিম খান। এবার সেই ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (পিটিআই) দলের জেলবন্দি প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে প্রকাশ্য়ে বড় তথ্য।
ইমরান নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্ত জল্পনায় জল ঢাললেন তাঁর দলেরই সেনেটর খুররম জিশান। শনিবার তিনি জানিয়েছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ‘বেঁচে রয়েছেন, আদিয়ালা কারাগারেই বন্দি রাখা হয়েছে’ তাঁকে। তা হলে হঠাৎ করেই এত জল্পনা তৈরির কারণ কী? খুররমের অভিযোগ, নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে ইমরান খানকে। এই সময়কালে তাঁকে দেশছাড়া করার ছক কষেছিল পাকিস্তানের শেহবাজ সরকার।
এদিন সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খুররম বলেন, ‘দেশের সরকার ইমরান খানের জনপ্রিয়তা দেখে ভয় পেয়েছে। যে কারণে এই সরকার তাঁর কোনও ছবি বা ভিডিয়ো প্রকাশ করতে চায়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। প্রায় এক মাস ধরে তাঁকে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। তাঁর পরিবার, আইনজীবী, এমনকি পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতৃত্বদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি দিচ্ছে না। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমান।’
ইমরান খানের সঙ্গে ‘তলে তলে’ পাক সরকার চুক্তির চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ পিটিআই সেনেটরের। এমনকি, এই চুক্তির সুবাদে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাঁরা। এদিন এএনআই-কে খুররম জিশান জানিয়েছেন, ‘ইমরান খান সুস্থ রয়েছেন। বর্তমানে আদিয়ালা জেলে বন্দি। তাঁর সঙ্গে এই সরকার ক্রমাগত চুক্তির চেষ্টা করেছে। তাঁকে চুপ থাকার বিনিময়ে মুক্ত করে দেবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অন্য কোনও দেশে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইমরান খান সেই সব প্রস্তাবকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। তিনি রাজি হননি।’
প্রসঙ্গত, একাধিক মামলায় ২০২৩ সাল থেকে জেলবন্দি ইমরান খান। চলতি বছরের গোড়ার দিকেই আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সাজা দিয়েছে পাকিস্তানের আদালত। সাজা হয়েছে তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিরও। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, সপ্তাহে একদিন জেলবন্দি আসামীর সঙ্গে দেখা করতে পারে তাঁর পরিবার। তবে ইমরানের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম লঙ্ঘন হচ্ছে বলেই অভিযোগ পরিবারের। দেখা করতে দিচ্ছে না শেহবাজ সরকারের প্রশাসনিক কর্তারা।