নয়া দিল্লি এবং মালে: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মলদ্বীপের এক মন্ত্রীর অবমাননাকর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে, মলদ্বীপ সরকারের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করল ভারত সরকার। মালয়েশিয়ার ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে, মহাম্মদ মুইজ্জুর নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। গত সপ্তাহে, লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানকার অপরূপ সুন্দর সৈকতের ছবি পোস্ট করে, ভারতীয়দের এই দ্বীপ ভ্রমণের আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পর্যটনকে উৎসাহ দিয়েছিলেন। এরপরই, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘জোকার’ এবং ‘পুতুল’ বলে কটাক্ষ করেন মলদ্বীপের যুব ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মরিয়াম শিউনা।
দ্বীপরাষ্ট্রের মন্ত্রীর ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। যার জেরে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ওই পোস্ট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে, বিতর্ক থামেনি। মলদ্বীপের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ নাশিদও প্রধানমন্ত্রী মোদী সম্পর্কে মরিয়ম শিউনার ওই অবমাননাকর মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। মলদ্বীপের মন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দা করে তিনি, শিউনার ভাষাকে ‘ভয়াবহ’ বলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নাশিদ লিখেছেন, “মলদ্বীপের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য সহায়ক এক প্রধান মিত্রশক্তির নেতার প্রতি মলদ্বীপের সরকারি কর্তা মরিয়াম শিউনা কী ভয়াবহ ভাষা ব্যবহার করেছেন। মহম্মদ মুইজু সরকারের অবশ্যই এই মন্তব্যের বিরোধিতা করা উচিত এবং ভারতকে স্পষ্ট আশ্বাস দিতে হবে যে এই মন্তব্য মলদ্বীপ সরকারের নীতির প্রতিফলন নয়।”
প্রকৃতপক্ষে, এই বিষয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির উপদেশই গ্রহণ করেছে মলদ্বীপের বর্তমান সরকার। রবিবার মলদ্বীপ সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তাদের মন্ত্রীর করা অবমাননাকর মন্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। মলদ্বীপ সরকারের মতামত নয়। তারা বলেছে, “মলদ্বীপ সরকার বিদেশি নেতা এবং উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে করা অবমাননাকর মন্তব্য সম্পর্কে সচেতন। এই মতামতগুলি ব্যক্তিগত এবং মালদ্বীপ সরকারের মতামতের প্রতিনিধিত্বকারী নয়। সরকার মনে করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে গণতান্ত্রিক এবং দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করা উচিত। ঘৃণা, নেতিবাচকতা ছড়ায় এবং মলদ্বীপ ও এর আন্তর্জাতিক বন্ধুদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে বাধা দেয়, এমন মন্তব্য করা উচিত নয়। যারা এই ধরনের অবমাননাকর মন্তব্য করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না সরকার।”
তবে, শুধু মরিয়ম শিউনা একাই নন, মলদ্বীপের সাংসদ জাহিদ রমিজ-সহ মলদ্বীপ সরকারের অনেক গন্যমান্য ব্যক্তিই প্রধানমন্ত্রী মোদীর লাক্ষাদ্বীপ সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। আসলে, প্রধানমন্ত্রী মোদী লাক্ষাদ্বীপের ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার পর, অনেকেই এই ভারতীয় দ্বীপকে মলদ্বীপের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অনেকেই দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর পদক্ষেপে মলদ্বীপের পর্যটন বড় ধাক্কা খেতে পারে। ভারতীয় পর্যটকদের কাছে, মলদ্বীপের জায়গা নিতে পারে লাক্ষাদ্বীপ। তার মধ্যে মলদ্বীপের সরকারি কর্তাদের এই সকল মন্তব্যের জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই মলদ্বীপ বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছেন।