নয়া দিল্লি: আর কোনও একটি বা দুটি শক্তিশালী দেশের হাতে থাকবে না পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ। ভারতের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা হচ্ছে এক বহুমুখী বিশ্ব। সেই বিশ্বে শুধু ভারত নয়, গ্লোবাল সাউথের বাকি দেশগুলিও তাদের উপস্থিতির জানান দেবে। এমনটাই মত, বিখ্যাত পশ্চিম এশিয় স্ট্র্যাটেজিস্ট ওয়ায়েল আওয়াদের। সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে এক সাক্ষাত্কার দিয়েছেন আওয়াদ। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন বা এসসিও-র মতো আঞ্চলিক ফোরামের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আওয়াদ জানান, বহুমুখী বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় ভারতের সক্রিয় ভূমিকা প্রশংসনীয়।
সম্প্রতি, এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর ভাষণে, বাণিজ্য, ভ্রমণ এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হিসেবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ, উগ্রপন্থা এবং বিচ্ছিন্নতাবাদকে চিহ্নিত করেছিলেন জয়শঙ্কর। তাঁর এই ভাষণের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আওয়াদ। বিশেষ করে রাশিয়া, ইউক্রেন, পশ্চিম এশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যে যে সংঘাত চলছে, সেই প্রেক্ষাপটে এই সমস্যাগুলির সমাধান জরুরি বলে জানিয়েছেন আওয়াদ।
তিনি বলেছেন, “আমি মনে করি তিনি (জয়শঙ্কর), বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের সমস্যাকে তিনি সঠিকভাবে তুলে ধরেছেন। আমরা খুব বিপজ্জনক পরিবেশে বাস করছি। রাশিয়া, ইউক্রেন, পশ্চিম এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য – বিশ্বের বিভিন্ন অংশে যুদ্ধ চলছে। আফগানিস্তান এবং বিশ্বের এই অংশে একের পর এক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন মাথা চাড়া দিচ্ছে। আমার মতে, সব সদস্য দেশ সাংহাই সংস্থার মূল ভিত্তি মেনে চলে, তাদের পক্ষে এই বিষয়গুলি মোকাবিলা করার জন্য এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করতে হবে।”
এছাড়াও, দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ টানার জন্য শান্তি ও স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা অপরিহার্য বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “শান্তি এবং স্থিতিশীল একটি পরিবেশের প্রয়োজন। বিশ্বের যে কোন প্রান্তের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের কোন প্রান্তে যদি অশান্তি বিরাজ করে, মানুষ সেখান থেকে পালিয়ে যায়। যদি এসসিও-র মস্ত স্টেকহোল্ডারদের একসঙ্গে হাত মিলিয়ে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করাটা নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে সমস্ত বিনিয়োগকারীরা এখানে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় আসতে পারেন। পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য এবং জনগণের কল্যাণে এখানে সবথেকে বেশি উন্নয়ন প্রয়োজন। কিন্তু, বিশ্বের এই অংশে যদি শান্তির পরিবেশ তৈরি না করা যায়, কেউ ব্যবসা করতে আসবে না। তাতে ক্ষতি হবে এখানকার মানুষের।”